রোহিঙ্গারা জেনোসাইডের শিকার: সুজন

যে কয়টি শর্ত পূরণ হলে কোথাও জেনোসাইড (গণহত্যা)  ঘটেছে বলা হয়, তার সব কয়টি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ক্ষেত্রে দেখা যায়। জেনোসাইডের ১০টি শর্ত এখানে পূরণ হয়েছে। এটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে ঘটে চলা হত্যাযজ্ঞ।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুজন আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা: প্রেক্ষিত, বর্তমান পরিস্থিতি আর সম্ভাব্য করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ভারত সহায়তা না দেওয়ার বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা কূটনৈতিকভাবে চরম ব্যর্থ হয়েছি। আমরা যাদের বন্ধু বলে মনে করি তারাই পাশে দাঁড়ায়নি।

আলোচনায় সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জেনোসাইডের যে কয়টি শর্তের কথা বলা হয় তার সবক’টি রাখাইনে ঘটেছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু আমাদের জন্য একটি বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে সুজনের নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ সমস্যা আগামীতে আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীর চাপ সহ্য করা কঠিন হবে। এ ছাড়াও রোহিঙ্গা ইস্যু ভয়াবহ নিরাপত্তাজনিত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় হলো চরমভাবে নিগৃহীত ও ক্ষুব্ধ এ জনগোষ্ঠীকে স্বার্থান্বেষী মহল উগ্রবাদের পথে প্ররোচিত করতে পারে। যা শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলকেই অস্থিতিশীল করতে পারে।

রাজনীতিবিদ এস এম আকরাম আলোচনাকালে কূটনৈতিক অবস্থানের সমালোচনা করে বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা কূটনৈতিকভাবে চরম ব্যর্থ হয়েছি। আমরা যাদের বন্ধু বলে মনে করি, বন্ধু বলে প্রচার করি, এ রকম পরিস্থিতিতে তারাই পাশে দাঁড়ায়নি।’

ভাসানচর ও বালুরচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের প্রস্তাবকে আত্মঘাতী মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার। তিনি বলেন, যত দ্র্রুত বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিসরে নিয়ে যাওয়া যায় এবং এদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া যায় তত ভালো। তাদের জন্য ভাসানচরে আলাদা করে ব্যবস্থা করার যে পরিকল্পনার এখনই কোনও প্রয়োজনে আছে বলে আমি মনে করি না।

আলোচনা অনুষ্ঠানে মানবাধিকারকর্মী, লেখক, সাংস্কৃতিক বাক্তিত্বসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।