‘পোল্ট্রি মুরগি ও মাছে ক্রোমিয়াম ও সীসার মাত্রা ভয়াবহ’

বিশ্ব খাদ্য দিবসে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকপোল্ট্রি মুরগি ও মাছে ভয়াবহ মাত্রায় ক্রোমিয়াম ও সীসা পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। এ কাজের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে সারাবছর নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এই দুই সংস্থা। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে জাতীয় বিনিয়োগ ও বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদও দেন তারা।
বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে এসব দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে পবা কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, দেশের সিংহভাগ খাদ্য আসে কৃষি থেকে। কিন্তু প্রতিনিয়ত খাদ্য উৎপাদন, গুদামজাতকরণ ও বাজারজাত প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্যর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন ধরনের সার, কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু শস্য, সবজি বা ফলই নয়, আমিষজাত খাদ্যের প্রধান উৎস পোল্ট্রি মুরগি এবং মাছও বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে।
গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘পোল্ট্রি মুরগি ও মাছে ভয়াবহ মাত্রায় ক্রোমিয়াম ও সীসা পাওয়া গেছে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে এক ভয়াবহ সংকটময় সময় পাড়ি দিচ্ছি। আর এ সংকট মোকাবিলায় খাদ্য উৎস ও খাদ্য উৎপাদনকারী কৃষকের নিরাপত্তা সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।’
পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে নিরাপদ খাদ্যের সংকট থেকে উত্তরণে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন পবার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান, বারসিকের সমন্বয়ক সৈয়দ আলী বিশ্বাস, চিকিৎসক ও শিশু-কিশোর সংগঠক ড. লেলিন চৌধুরী, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, কৃষিবিদ এবিএম তৌহিদুল আলম প্রমুখ।
বৈঠকে বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশের কৃষি, অর্থনীতি ও মানবাধিকর নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও গ্রাম উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বারসিক সমন্বয়কারী পাভেল পার্থ।
বৈঠক থেকে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— মাঠ থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সব পর্যায়ে খাদ্যকে কীটনাশকসহ সব ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে মুক্ত রাখা, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে নিয়মিত খাদ্যের মান পরীক্ষা করে জনগণকে জানানো, ভেজালবিরোধী অভিযানকে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে আসা, নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষকে আরও জনবান্ধব ও যুববান্ধব করে সক্রিয় করা, খাদ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও দফতরকে সমন্বয় করে সক্রিয় করে তোলা, খাদ্যে ভেজাল বা বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগকে অপরাধের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-
কী করছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ