তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ব্রিফিং করেন।
ব্রিফিংয়ে সচিব বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড এতদিন বিধি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এবারে এটা আইনে পরিণত হচ্ছে।’
সচিব জানান, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত খসড়া অনুযায়ী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে যিনি বিদেশে গেছেন অথবা বিদেশে আছেন অথবা বিদেশে কর্মরত আছেন— এমন নাগরিকদের অভিবাসী বলা হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোনও দেশে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করছেন, কাজে আছেন অথবা কাজ শেষে ফিরে এসেছেন— এমন বাংলাদেশি নাগরিকদের অভিবাসী কর্মী হিসেবে সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে এই আইনে। অভিবাসী ও অভিবাসী কর্মী উভয়েই প্রবাসী নামের পরিচিত হবেন বলে জানান সচিব।
অনুমোদিত খসড়া অনুযায়ী এই বোর্ডে থাকবেন ১৬ জন সদস্য। পদাধিকারবলে এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব। এই বোর্ডে অন্যান্যের মধ্যে থাকবেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক (ডিজি) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিমান মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেনন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়া, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) প্রেসিডেন্ট এবং সরকারের দুই জন প্রতিনিধি থাকবেন এই বোর্ডে। সরকারের এই দুই প্রতিনিধি হবেন বিদেশ থেকে প্রত্যাগত এবং এর মধ্যে একজন থাকবেন নারী।
সচিব জানান, বোর্ডের মেয়াদ হবে তিন বছর। প্রতি দুই মাসে একবার বৈঠক করবে এই বোর্ড। বোর্ডের ৯ জন সদস্যের উপস্থিতি বৈঠকের কোরাম হিসেবে গণ্য হবে। প্রবাসে আটকে পড়া (বিপদগ্রস্ত) কর্মীদের দেশে ফেরত আনতে সহযোগিতা করা, দুর্ঘটনায় আহত ও অসুস্থ প্রবাসী কর্মীকে আর্থিক সাহায্য করা, প্রবাসে মৃত্যু হওয়া কর্মীর লাশ দেশে ফেরত আনা ও দাফনে সহযোগিতা করার মতো ১২ ধরনের কাজ করবে এই বোর্ড।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়ায় বলা আছে, বোর্ডের একটি তহবিল থাকবে। সরকারি অনুদানসহ আটটি খাত থেকে এই তহবিলের অর্থ আসবে। বোর্ডের চেয়ারম্যান জরুরি প্রয়োজনে যেকোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তবে তা বোর্ডের পরবর্তী সভায় অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।
মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে ২০১৮ সালের জন্য ২২ দিন সরকারি ছুটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে, বৈঠকের শুরুতেই অনির্ধারিত আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ডে’র স্বীকৃতি দেওয়ায় এবং ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী ৩০তম স্থানে থাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানায় মন্ত্রিসভা।