বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষক কমেছে, বাড়াতে চায় ইউজিসি

ইউজিসি

নারী ক্ষমতায়ন ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষক বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসির মতে, নারী ক্ষমতায়ন ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দেশের জন্য ইতিবাচক। দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রতিবছর নারী শিক্ষক বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। অথচ এই পরিমাণ সামান্য হলেও কমেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ২০১৬ সালের খসড়া বার্ষিক প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষক বাড়ানো দরকার। গত দুই বছরে বেশকিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। নিরাপত্তা সুবিধার জন্য অনেক নারী সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলোই ঢাকার বাইরে, যেখানে মেধাবী নারীরা হয়তো যেতে চাননি। তাছাড়া মেধাবী শিক্ষক নেওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ আলাদা করে বিবেচনা করার সুযোগও অনেক সময় থাকে না। সে কারণে নারী শিক্ষক না বেড়ে সামান্য কমেছে। তবে নারী শিক্ষক বাড়ার প্রয়োজন আছে।’

ইউজিসির ২০১৬ সালের খসড়া বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বাড়লেও ২০১৬ সালে নারী শিক্ষক কমেছে দুই জন। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বমোট শিক্ষক ১৫ হাজার ৫৭১ জন। এর মধ্যে নারী শিক্ষক চার হাজার ৪৭২ জন, যা গত বছরের তুলনায় দুই জন কম। পূর্ণকালীন নারী শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক ৬৬ জন, সহযোগী অধ্যাপক ৯০ জন, সহকারী অধ্যাপক ৭৮৭ জন ও প্রভাষক দুই হাজার ৫১১ জন। অন্যদিকে খণ্ডখালীন নারী শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক ১২৫ জন, সহাযোগী অধ্যাপক ৬৩ জন, সহকারী অধ্যাপক ১৫২ জন ও প্রভাষক ৫৩৪ জন। এছাড়া, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিচিং অ্যসিস্ট্যান্ট হিসেবে ১৪৪ জন কর্মরত ছিলেন। আগের বছরের তুলনায় মাত্র দুই জন নারী শিক্ষক কমে গেলেও ইউজিসি মনে করে, প্রতিবছরই নারী শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত।

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে দেশে পিএইডি ডিগ্রিধারী নারী শিক্ষকের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ১৫৯ জন। ২০১৫ সালের চেয়ে এই সংখ্যা ১৭৭ জন বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৪ জন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে এবং দ্বিতীয় সর্বাধিক ৩২ জন ছিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে।

অন্যদিকে, ২০১৬ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক ছিল ১৫ হাজার ৫৭১ জন, যা ২০১৫ সালের চেয়ে ৫১৩ জন বেশি। এর মধ্যে পূর্ণকালীন শিক্ষক ১০ হাজার ৪৬৩ জন, যা ২০১৫ সালের চেয়ে দুই হাজার ৭৫৪ জন বেশি। একই সময়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা ২৩৮ জন বেড়ে হয়েছে পাঁচ হাজার ১০৮ জন। এতে শিক্ষক-শিক্ষর্থীর গড় অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১:২২, যা ২০১৫ সালে ছিল ১:২৩। এই সূচক কমার প্রবণতাকে বার্ষিক প্রতিবেদনে সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই চিত্রের বিপরীতে নারী শিক্ষক না বেড়ে সামান্য হলেও কমে যাওয়ার কারণেই ইউজিসি মনে করছে, নারী শিক্ষক বাড়াতে হবে।