রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতা

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি সমঝোতা (অ্যারেঞ্জমেন্ট) স্বাক্ষর হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিয়ানমারে স্টেট কাউন্সিলরের অফিসে দু’দেশের মধ্যে এই সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাএতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের ইউনিয়ন মিনিস্টার চ টিন্ট সোয়ে স্বাক্ষর করেন। মিয়ানমারের কূটনৈতিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে সমঝোতার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। 
বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও সমঝোতা স্বাক্ষরের বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো শুরু হবে।

এছাড়া, জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপ তিন সপ্তাহের ভেতর গঠন করা হবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য দ্বিপক্ষীয় ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে।

এর আগে ১৯৭৮ সালে দু’দেশ চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির অধীনে দুই লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ছয় মাসের মধ্যে ফেরত গিয়েছিল। পরে ১৯৯২ সালে দু’দেশের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা হয়, যার অধীনে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য দু’পক্ষের মধ্যে সম্প্রতি ছয় বার প্রস্তাব-পাল্টা প্রস্তাব চালাচালি হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম প্রস্তাব দেওয়া হয় ২৩ সেপ্টেম্বর এবং মিয়ানমার ইউনিয়ন মন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময়ে গত ২ অক্টোবর ফের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয়। মিয়ানমার গত ২০ অক্টোবর এর জবাব দিলে বাংলাদেশ পুনরায় ২ নভেম্বর পাল্টা প্রস্তাব দেয়। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ৬ নভেম্বর পাল্টা প্রস্তাব দেওয়া হলে বাংলাদেশ তার দু’দিন পর জবাব দেয়।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আর গত বছরের অক্টোবর থেকে জুলাই পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।