সৎ ও কর্মঠ সরকার প্রধানদের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রিপরিষদের অভিনন্দন


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সৎ ও কর্মঠ সরকার প্রধানদের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে এ দুটি স্বীকৃতি অর্জন করায় অভিনন্দন জানান সরকারের মন্ত্রীরা। এসময় যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে বিজয়ী হওয়ার পর দলটির ‘লেবার নিউ কামার এমপি অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিককেও অভিনন্দন জানায় মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে বিশ্বের সৎ সরকার প্রধানদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় অবস্থানে থাকায় এবং একই প্রতিষ্ঠানের করা কর্মঠ সরকার প্রধানদের তালিকায় তিনি ৪র্থ অবস্থানে থাকায় আজকের বৈঠকের শুরুতেই তাকে ধন্যবাদ জানায় মন্ত্রিপরিষদ।
প্রসঙ্গত সৎ সরকার প্রধানের তালিকা করার ক্ষেত্রে খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স ৫টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিদেশি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট না থাকা, ক্ষমতা গ্রহণের পর ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা, গোপন করা সম্পদের তথ্য, সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলা এবং দেশের মানুষ তার সম্পর্কে কী ভাবছেন। এসব বিষয়ে গবেষণা করে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার বিদেশি কোনও ব্যাংকে কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। নির্ধারিত বেতনের বাইরে তার কোনও অতিরিক্ত আয়ের উৎস নেই, তার কোনও গোপন সম্পদ নেই, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কোনও মামলা বিচারাধীন নেই এবং দেশের ৭৮ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন নেতা হিসেবে তিনি সৎ। এসব বিবেচনায় বিশ্বের সৎ সরকার প্রধানদের তালিকায় ৩য় অবস্থানে উঠে এসেছেন তিনি। ১৭৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের ওপর করা এই জরিপে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯০ নম্বর পেয়ে তালিকার শীর্ষে আছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং ৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয়  এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৮৭ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন শেখ হাসিনা।
এছাড়াও একই প্রতিষ্ঠানের করা বিশ্বের কর্মঠ সরকার প্রধানের তালিকায় ৪র্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেসব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান কঠোর পরিশ্রম করেন এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে তার দেশে দৃশ্যমান উন্নতি করেছেন, তাদের কাজ পর্যালোচনা করে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই জরিপের ক্ষেত্রে ১০ টি মাপকাঠি নির্ধারণ করেছে  পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স। এগুলো হলো: এক. একজন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান রাষ্ট্রপরিচালনায় কতক্ষণ সময় ব্যয় করেন। দুই. দিনে কতগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিন. এই সিদ্ধান্তের ফলে রাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে। চার. সহকর্মী বা অধঃস্তনদের কাজ তিনি তদারকি করেন কিনা। পাঁচ. সহকর্মী বা অধঃস্তনদের কাজের পরও তিনি বাড়তি কিছু যোগ করেন কিনা। ছয়. রুটিন কাজের বাইরে উদ্ভাবনীমূলক চিন্তা ও তার বাস্তবায়ন করেন কিনা। সাত. সাপ্তাহিক ছুটি নেন কিনা, নিলে সপ্তাহে কত দিন। আট. মাসিক ছুটি নেন কিনা, নিলে কতদিন। নয়. বাৎসরিক ছুটি নেন কিনা, নিলে কত দিন। দশ. তার (সরকার/রাষ্ট্রপ্রধানের) ব্যক্তিগত সময় কতটুকু। এর ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ৮৭ নম্বর পেয়ে তালিকার শীর্ষে, ৮৫ নম্বর পেয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি দ্বিতীয়, ৮৩ নম্বর পেয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তৃতীয় এবং ৮০ নম্বর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ হয়েছেন। এ তালিকায় ৭৮ নম্বর পেয়ে পঞ্চম অবস্থানে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ‘লেবার নিউ কামার এমপি অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হওয়ায় তাকেও অভিনন্দন জানায় মন্ত্রিসভা। যুক্তরাজ্যের বিরোধীদল লেবার পার্টি থেকে কম বয়সে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় ওয়েস্ট মিনিস্টারে প্যাচওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে গত বুধবার তিনি ওই পুরস্কার পান। হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাওয়ের হাত থেকে তিনি ওই পুরস্কার নেন।