স্বজনদের স্মৃতিচারণায় জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ‘৭১ এর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জাতীয় চার নেতা কলকাতায় পাড়ি জমান। নগরীর ৮নং থিয়েটার রোডে অস্থায়ী কার্যালয়ে বসে মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তারা। আর ১৫ ডিসেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডিপি ধরের মাধ্যমে বিজয়ের আগাম বার্তা পান। আর বিজয় দিবসের মূল ঘোষণা শুনতে পান বেতারে। তবে তারা দেশে ফেরেন ২২ ডিসেম্বর। বিমানবন্দরে জাতীয় চার নেতাকে অভ্যর্থনা জানান দেশের আপামর জনগণ। আর ৯ মাস ১৪ দিন কারারুদ্ধ থাকার পর জাতির জনক দেশ প্রত্যাবর্তন করেন ‘৭২-এর ১০ জানুয়ারি।
এ প্রসঙ্গে ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ছেলে ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বিজয় সন্নিকটে, এটা জাতীয় চার নেতার অনুভব হয়েছিল ১ ডিসেম্বর থেকে। আর ৬ ডিসেম্বর যখন ভারত বাংলদেশকে স্বীকৃতি দেয়, সেদিন থেকে দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে বলে ধরেই নেয় সবাই।’
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে মিত্রবাহিনীর কাছে। তবে ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় চার নেতা এ খবর পেয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ উপদেষ্টা ডিপি ধরের মাধ্যমে এই খবর পেয়েছিলেন তারা।’
এ প্রসঙ্গে এএইচএম কামরুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামন লিটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যখন দেশ স্বাধীন হয় তখন আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আমরা সপরিবারে কলকাতার সিআইটি এভিনিউতে আশুতোষ ঘোষের বাড়িতে থাকতাম। অন্য তিন নেতাও এই এলাকায় বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তবে তারা অফিস করতেন ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে। সেখান থেকে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ আদান-প্রদান করতেন। মাঝে মাঝে সীমান্তে এসে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে দেখা করে যেতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহনী আত্মসমর্পণ করবে-এই তথ্য জাতীয় চার নেতার কাছে ১৫ ডিসেম্বর আসে। মিত্রবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান শোনেন বেতারের মাধ্যমে।’
ডিপি ধর ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শদাতা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারত-সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থনে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্মাননা (মরণোত্তর)পেয়েছিলেন।