এর আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রেসক্লাবে এসেছিলেন তার একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান। তিনি জানান, নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একান্ত সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আপনাদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তিনি আপনাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, অনশন ভেঙে যার যার বাড়িতে ফিরে যান।’
শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন জানান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নন-এমপিও শিক্ষকদের অনশনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।এরপর নন-এমপিও শিক্ষকদেরকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষা সচিব।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস ছিল, তিনি আমাদের কথা শুনবেন। তার আশ্বাসে আমরা আজ অনশন ভেঙে যার যার ফিরে যাচ্ছি।’
এমপিওভুক্তির (মান্থলি পেমেন্ট-অর্ডার) দাবিতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। আমরণ অনশন ও অবস্থান ধর্মঘটের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। তবুও ২০১৬-১৭ আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি অথবা বাড়তি ভাতার ব্যবস্থা করতে কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের দাবি— দীর্ঘ ১০ থেকে ১৫ বছর বিনাবেতনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তারা। এ কারণে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। একইসঙ্গে ধরে রাখা যাচ্ছে না শিক্ষার মান।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ জানান, দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও কারিগরি মাদ্রাসা। সবই বেসরকারি ব্যবস্থাপনা নির্ভর। এর মধ্যে বিভিন্ন স্তরে পাঁচ-ছয় হাজারের বেশি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে, যা এই স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক-চতুর্থাংশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী।