কোরাম ছাড়াই সংসদ অধিবেশন

সংসদ অধিবেশননতুন বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর মাত্র চার দিনের মাথায় সংসদে এমপিদের অনুপস্থিতি ছিল চোখের পড়ার মতো।  অনুপস্থিতির সংখ্যা এমন সংখ্যায় দাঁড়ায় যে, এক পর্যায় কোরাম পূর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ জন সংসদ সদস্যও বৈঠকে ছিলেন না। সংসদের সামনের সারিতে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ছাড়া কেউই ছিলেন না। তবে  এ বিষয়ে কেউ অধিবেশন পরিচালনাকারী ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ না করায় বৈঠক চলতে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এক পর্যায়ে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) বেসরকারি সদস্য দিবসে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদের বৈঠক শুরু হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কোরাম সংকট দেখা দেয়। এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর অধিবেশন শুরু হলে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হয়।

মাগরিবের নামাজের বিরতির পর ফজলে রাব্বী মিয়া ৭১ বিধিতে জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ বিধির নোটিশগুলো নিষ্পত্তি করেন। ওই সময় নোটিশ দেওয়া বেশিরভাগ সদস্যই অনুপস্থিত ছিলেন। বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব চলাকালীন অধিবেশন কক্ষে এক পর্যায়ে উপস্থিত সদস্য সংখ্যা স্পিকারসহ ৫৮ জনে নেমে আসে। মন্ত্রীদের মধ্যে এসময় কৃষিমন্ত্রী ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসিও উপস্থিত ছিলেন।

সংবিধান অনুযায়ী উপস্থিত সদস্যের সংখ্যা ৬০ জনের কম হলে কোরাম সংকট হয়। তবে কোরাম সংকটের জন্য অধিবেশনে সভাপতিত্বকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়। যদি কোনও সদস্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তবে স্পিকার কোরাম পূর্ণ হওয়ার জন্য পাঁচ মিনিট ধরে ঘণ্টা বাজানোর নির্দেশ দেবেন। এর মধ্যে কোরাম না হলে স্পিকার অধিবেশন মুলতবি রাখবেন।

বৃহস্পতিবার বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব জমা দেন পাবনার সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, চট্টগ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও দিদারুল আলম, ঢাকার এম এ মালেক এবং ফেনীর রহিম উল্লাহ। এর মধ্যে প্রথম তিন জনই অধিবেশন কক্ষে অনুপস্থিত ছিলেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বেও প্রশ্নকারী একাধিক সদস্যও অনুপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে শুরুর প্রশ্নকারী মৌলভীবাজারের আব্দুল মতিন অনুপস্থিত ছিলেন। তিন নম্বর প্রশ্নকারী আখম জাহাঙ্গীর হোসাইনও অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোরাম সংকটের বিষয়টি স্পিকার বুঝতে পেরে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেছেন।’ ওই কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর বৃহস্পতিবার একাধিক সংসদ সদস্যের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র একজন সংসদ সদস্য বক্তব্য শেষ করার পরই স্পিকার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।