এদিকে সকাল থেকেই কাকরাইল মসজিদে আসতে থাকেন মাওলানা সা’দের অনুসারীরা। তাদের মধ্যে আছেন বিদেশি মুসল্লিও। ধারণা করা হচ্ছে, এখানে আসা মুসল্লিরা শুক্রবার ইজতেমা মাঠে যাবেন না।
গত ১০ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান মাওলানা সা’দ। কিন্তু বিশ্ব ইজতেমায় তার অংশগ্রহণে বাধা দিতে আন্দোলনে নামেন তাবলিগ জামাতের একটি পক্ষ এবং কওমি মাদ্রাসার আলেম ও শিক্ষার্থীরা। ওইদিন সকাল ১০টা থেকেই বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও সেখান থেকে ইজতেমা মাঠে যাওয়ার সব রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। সকালে বেফাকের সামনে বিক্ষোভ করেন সিনিয়র কওমি আলেমরা। এ কারণে পুলিশি পাহারায় বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বিকাল সাড়ে ৩টায় কাকরাইল মসজিদে পৌঁছান তিনি। এ ঘটনায় বিমানবন্দর ও আশেপাশের এলাকায় টানা ৭ ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
সম্প্রতি কওমি শিক্ষা নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের জের ধরে তাবলিগ জামাতের দিল্লির মুরব্বি মাওলানা সা’দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন ভারতের দেওবন্দের আলেমরা। এরই জের ধরে বাংলাদেশেও কওমি আলেমরা তাকে প্রতিহতের ঘোষণা দেন। সা’দবিরোধীরা বৃহস্পতিবার বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট এলাকায় আন্দোলন শুরু করে।
দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে মাওলানা সা’দের ‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের কারণে তার সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আহমদ শফীসহ বাংলাদেশের সিনিয়র আলেমরা চেয়েছেন, সংঘর্ষ এড়াতে সা’দ ও তার অনুসারী বা বিরোধীরাও যেন ইজতেমায় অংশ না নেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘মাওলানা সাদের বক্তব্য নিয়ে তাবলিগ জামাতের মুরব্বি ও আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছিল। বৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে। উভয়পক্ষ এ সমঝোতা প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন।’
সচিবালয়ে অবস্থিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নেতৃত্ব দেন গুলশান জামে মসজিদের খতিব ও যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান। এছাড়াও ছিলেন আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা শেখ আব্দুল্লাহ, বেফাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা আশরাফ আলী, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মাহফুজুল হক, গাজীপুরের কাপাসিয়ার দেওনা পীর সাহেব অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। মাওলানা সা’দের পক্ষে ছিলেন বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের শুরা সদস্য মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন জন মুরব্বি।