শিগগিরই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো শুরু হবে: কাজী নাবিল আহমেদ



সংসদে কাজী নাবিল আহমেদশিগগিরই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।
সরকারি দলের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে, তাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে হয়েছেন “মাদার অব হিউম্যানিটি”। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বনেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বোচ্চার। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার চুক্তি হয়েছে। ঢাকায় সদ্য অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। আশা করি, শিগগিরই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সেক্টরে উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করেছেন। বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন মহলের বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু এখন সুদৃশ্যমান। মহাকাশে যাচ্ছে আমাদের স্যাটেলাইট। বিদ্যুৎ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান।’
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে ইউনেসকোর স্বীকৃতির প্রসঙ্গ টেনে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও রাষ্ট্র দর্শন বিষয়ে আলোচনা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। দেশ ও জাতির এই বিরল স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।’
দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় আবদুল হামিদকে অভিনন্দন জানান তিনি।
যশোরে বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘যশোরে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা সফটওয়ার পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এতে পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। দেশের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে কার্যক্রম শুরু করেছে। দুইশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোর মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত। প্রধানমন্ত্রী যশোর সফরে গিয়ে যে আটটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন, এটি তার অন্যতম। এই স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন।’ এই কাজ ত্বরান্বিত করতে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
যশোরে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘যশোরের উন্নয়নের জন্য আরও ৭০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়নাধীন হয়েছে। যশোরের ভৈরব নদ আগে দখলদারদের কারণে মৃত হতে বসেছিল। সেই নদ আবার প্রাণ পেতে শুরু করেছে। ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নদের খনন কাজ শুরু হয়েছে।’ এই নদের তীরে দড়াটানা থেকে রেলগেট পর্যন্ত পায়ে হাঁটার পথ তৈরি করা গেলে মানুষের হাঁটাচলার সুযোগ হবে বলেও মন্তব্য করেন।
যশোরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘আড়াইশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কাজ ও একশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর বিমানবন্দর আধুনিকায়নের কাজ চলমান। আরও একটু পৃষ্ঠপোষকতা করে একে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী যশোরকে “অর্থনৈতিক জোন” করার ঘোষণা দিয়েছেন।’
কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘যশোরের আঞ্চলিক সড়কগুলোর উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এবারের অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তাগুলো এখন খুব নাজুক অবস্থানে রয়েছে। সামনে নির্বাচন, ভালো মানের ঠিকাদার দিয়ে এই রাস্তাগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন।’