প্রভাব পড়েছে আকাশপথের ভ্রমণে

আকাশ পথে ভ্রমণনেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় কিছুটা হলেও কমেছে আকাশপথে ভ্রমণকারী যাত্রীদের সংখ্যা। বিশেষ করে যারা ছুটি কাটাতে বা ভ্রমণের জন্য দেশের বাইরে বেড়াতে যাবেন বলে টিকিট কেটেছিলেন, তাদের অনেকে যাত্রা বাতিল করছেন। তবে  যারা ব্যবসায়িক বা অফিসিয়াল কাজে দেশের বাইরে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে এ ঘটনার কোনও প্রভাব নেই। বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে ইউএস-বাংলার ‘ঢাকা টু কাঠমান্ডু’ ফ্লাইট বুধবার (১৪ মার্চ) থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উড়োজাহাজ সংকটের কারণে ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএস- বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের এয়ারক্রাফট স্বল্পতার কারণে আজ থেকে (বুধবার, ১৪ মার্চ) ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ নতুন করে ফ্লাইট চালু হবে এ বিষয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না। একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
ইউএস-বাংলা সূত্রে আরও জানা যায়, এরইমধ্যে যারা নেপাল যাওয়ার জন্য বুকিং দিয়েছিলেন, তাদের টিকেটের টাকা বনানী অফিস থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অন্যান্য রুটেও যাত্রীদের কেউ কেউ টিকিট বাতিল করেছেন।

দেশের আরেক বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ারেও যাত্রীদের ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে এয়ারলাইন্সটির সিনিয়ার ম্যানেজার (মার্কেটিং) মাহফুজুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ নেপালের ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়েছে। তবে এটা সাময়িক। আশা করছি, দ্রুত এ সমস্যা কেটে যাবে।’

মাহফুজুল আলম বলেন, ‘সব সময়ই যাত্রীরা নানা কারণে ফ্লাইট বাতিল করে থাকেন, এটি স্বাভাবিক। এই দুর্ঘটনার পর ফ্লাইট বাতিলের হার একটু বেড়েছে। তবে কতজন ভয়ে বাতিল করেছেন,তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। আশা করছি,এটা দ্রুত সমাধান হবে ।’

রিজেন্ট এয়ারওয়েজের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আকতার  ইউ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতগুলো মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এর প্রভাব তো কিছুটা থাকবেই। মানুষের মধ্যে একটা শোক ও  ভীতি আছে। যাত্রীদের  মধ্যে এ ঘটনার প্রভাব কিছুটা থাকলেও বড় আকারে ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে না।’

ঢাকা থেকে নেপাল রুটে যাত্রীদের ফ্লাইট বাতিলের হার বেশি বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে এ  ঘটনার কিছুটা প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে যারা নেপালে ছুটি কাটানো বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন,তাদের মধ্যে ফ্লাইট বাতিলের প্রবণতা বেশি। আর  যারা ব্যবসায়িক বা অফিসিয়াল কোনও কাজে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে এ প্রভাব নেই।’

এয়ার ইন্ডিয়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘মানুষের জীবনের গতি কখনও থেমে থাকে না। কাঠমান্ডুর দুর্ঘটনায় যাত্রীদের ওপরে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। কয়েকদিন গেলে আবারও স্বাভাবিক হবে। মানুষের মধ্যে যে ভীতি তৈরি হয়েছে,তা কেটে যাবে।’

প্রসঙ্গত,গত সোমবার (১২ মার্চ ) চার জন ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ মোট ৭১ জন আরোহী নিয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায়। অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৬ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৫১ জন আরোহী নিহত হয়েছেন।