কোটা বাতিল, পরিষ্কার কথা: প্রধানমন্ত্রী

সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনও কোটারই দরকার নেই।’ বুধবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
এর মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিলের ঘোষণা দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তার ভাষ্য, ‘কোটা থাকলেই সংস্কারের প্রশ্ন আসবে। এখন সংস্কার করলে আগামীতে আরেক দল আবারও সংস্কারের কথা বলবে। কোটা থাকলেই ঝামেলা। সুতরাং কোনও কোটারই দরকার নেই।’
শেখ হাসিনার সাফ কথা, ‘কোটা ব্যবস্থা বাদ, এটাই আমার পরিষ্কার কথা। জেলার জন্য কোটা সুবিধা আছে। অথচ জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে গেছে। যারা বিভিন্ন জেলার, তারাও কোটা চায় না। নারীদের কোটা আছে, তারাও কোটা চায় না। কেউই যখন এই কোটা চায় না, তাহলে আর কোটার দরকার কী? আমি বলে দিলাম, কোটাই থাকবে না। কোটার দরকার নাই। মেধা থেকে নিয়োগ হবে। কারও কোনও আপত্তি থাকার দরকার নেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ কারণে পুরো নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সংসদে এই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।  
প্রধানমন্ত্রী সংসদে আরও বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী, প্রতিবন্ধী— তারাও যেন বঞ্চিত না হয়। একসময় জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা ঢুকতে পারতো না। জাতির পিতা আইন করে সেই অবস্থার পরিবর্তন এনেছেন। পরে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা চালু করা হয়। সেই মেয়েরাও রাজপথে নেমে গেছে। তারাও কোটা চায় না। আমাদের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা বৈঠকে বসলো। সেখানেও নারীরা ছিল। তারা বললো, নারীরাও কোটা চায় না। তারা পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগ পাবে। এটা শুনে আমি খুশি। নারীর ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছি আমি। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেছি। সেই তারাও যখন কোটা চায় না, তখন কোটা পদ্ধতিরই দরকার নেই।’
জানা গেছে, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিষয়ে এর আগে দলীয় ফোরামে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জাতীয় সংসদে এবারই প্রথম এ বিষয়ে সরাসরি কথা বললেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবারের অধিবেশন শুরু হয় বিকাল ৫টায়।