সংরক্ষিত সংসদ সদস্যদের মেয়াদ বাড়াতে সংবিধান সংশোধন বিল পাসের সুপারিশ





সংসদসংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের বিধি আরও ২৫ বছর বহাল রাখার প্রস্তাব করে সংসদে সংসদে তোলা সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সোমবার (২৩ এপ্রিল) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলটিতে কোনও ধরনের সংশোধনী ছাড়াই সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী বিলটি তুললে তা সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মো. শামসুল হক টুকু, তালুকদার মো. ইউনুস, অ্যাড. মো. জিয়াউল হক মৃধা, সফুরা বেগম এবং আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল, ২০১৮-এর ওপর বিস্তারিত আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কোনও ধরনের সংযোজন-বিয়োজন ছাড়াই বিলটি পাসের সুপারিশ করেছি।’
বিলটি আসন্ন বাজেট অধিবেশনে পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংবিধানের এ সংশোধন অনুযায়ী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফার পরিবর্তে নিম্নরূপ (৩) দফা প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:(৩) সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করিয়া পঁচিশ বৎসরকাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাংগিয়া না যাওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশটি আসন কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং তাঁহারা আইনানুযায়ী পূর্বোক্ত সদস্যদের দ্বারা সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হইবেন। তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার কোন কিছুই এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন কোন আসনে কোন মহিলার নির্বাচন নিবৃত্ত করিবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ করা হয়। তবে ওই সময় মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এর আগে ২০০৪ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষিত নারী সদস্যের সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। একইসঙ্গে আসনগুলো সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়। ওই সংশোধনীতে মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ নবম সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে দশ বছর। সংবিধান অনুযায়ী ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ জন এবং সংসদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।