চিকিৎসক হতে চায় মা-বাবা হারানো বিজয়


মা-বাবা হারানো বিজয়রানা প্লাজা ধসে বাবা শাহাদাত হোসেন ও মা সেলিনা আখতারকে হারায় বিজয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর। একই দুর্ঘটনায় খালা পারভীন আখতারও মারা যান। এরপর থেকেই বিজয় তার নানি রাজিয়া বেগমের কাছে আছে। কিন্তু তার ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নানিকে।

রানা প্লাজায় নিহতদের সন্তানেরা মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করে তাদের মা-বাবাকে। মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। সেখানেই এই প্রতিবেদকের সঙ্গে বিজয় ও তার নানি রাজিয়া বেগমের কথা হয়। বিজয় জানায়, তার ইচ্ছা বড় হয়ে সে চিকিৎসক হবে, মানুষের সেবা করবে।
সাভারের ধলেশ্বরী নদীর ওপারে একটি গ্রামে থাকে নানির সঙ্গে থাকে বিজয়। নদী পার হয়ে প্রতিদিন ক্লাস করতে যায় একটি মাদ্রাসায়। এছাড়া প্রতি শুক্রবার সাভারের গেণ্ডায় একটি স্কুলে ক্লাস করে। ওখান থেকে বিজয় ২ হাজার টাকা পায়। বাবা-মার মৃত্যুর পর নানি অনেক কষ্টে তাকে লালন করছে। অর্থাভাবে বিজয়কে লালন-পালন করতে গিয়ে নানি রাজিয়া বেগমের অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওই দুই হাজার টাকার মধ্যেই তিনি বিজয়ে সব খরচ মেটান।

সে বলে, ‘নানি আমাকে খুব কষ্ট কইরা পড়ায়। নানি ছাড়া আমার তো আর কেউ নাই। আমি বড় হয়ে ডাক্তার হমু, মানুষের সেবা করমু।’
বিজয় আরও জানায়, গ্রামের অন্য ছেলেদের সঙ্গে মিশলে বিপথে যেতে পারে মনে করে তার নানি কারও সঙ্গে মিশতে দেয় না। তবে সে খেলাধুলা পছন্দ করে। অবসর সময়ে গ্রামে সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুই মেয়ে আর জামাইকে হারায়ে আমার আর কিসসু নাই। পোলাডারে মানুষ করতে চাই। কিন্তু ট্যাকার অভাবে পারি না। খুব কষ্টে তার পড়ালেখা চালায় যাইতেসি। কয়দিন পারুম জানি না। এরচেয়ে মইরা যাওয়াই ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বয়স অনেক হইসে তাই মাইনষের বাড়িতে কাজও করতে পারি না। কেউ সাহায্য করলে অনেক উপকার হইতো। পোলাডারে মানুষ করতাম।’

আরও পড়ুন:

‘ছুটির পর রানা প্লাজার মামলাগুলো নিয়ে আদালতে কথা বলবো’

 

২৪ এপ্রিল শ্রমিক নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি

রানা প্লাজা নিঃস্ব করেছে ‘ওদের’

 


৪ কারণে কাজে ফিরতে পারেননি রানা প্লাজার আহত শ্রমিকরা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: রায় হয়েছে একটি মামলার, ৩টি এখনও বিচারাধীন