খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালের মাত্র আধঘণ্টার ভারী বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব এলাকার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ধানমন্ডিস্থ রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি-৮/এ স্টাফ কোয়ার্টার মোড়, কাঁঠাল বাগান, গ্যাস্ট্রোলিভার গলি, কলাবাগান ডলফিন গলি, গ্রিন রোড, মোহাম্মদপুর, জিগাতলা, ধোলাইখাল, আজিমপুর, হাজারীবাগ, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, সেগুনবাগিচা, পল্টন, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, সার্কিট হাউজ রোড, রাজারবাগ, শান্তিবাগ, আরামবাগ, মতিঝিল, দিলকুশা, বঙ্গভবন এলাকা, কমলাপুর, মানিক নগর, বাসাবো, মুগদা, নিউমার্কেট পশ্চিম-দক্ষিণ পাশের বটতলা, বিজিবি-৩ ও ৪ নং গেট, নাজিমউদ্দিন রোড, হোসেনি দালান, চকবাজার, লালবাগ, কাজী আলাউদ্দিন রোড, বংশাল, জুরাইন, পোস্তগোলা, মুরাদপুর, শ্যামপুর, কদমতলা, মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শনিরআখড়া, শেখদী, দনিয়া, দয়াগঞ্জ রেল ব্রিজ অন্যতম। এসব এলাকার অধিকাংশে বেলা দেড়টার পরেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। তবে সিটি করপোরেশনের দাবি, বৃষ্টি শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমে গেছে। যদিও তাদের এমন দাবির কোনও সত্যতা পাননি নগরবাসী।
দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘অনেক এলাকায় ময়লা আবর্জনা ও পলিথিন জমে ম্যানহোলের ফাঁকা স্থানগুলো জ্যাম হয়ে পড়েছে। এ কারণে পানি সরতে সমস্যা হয়। আমরা সেগুলো অপসারণ করে দিয়েছি।’
চাঁনখারপুলের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকালের বৃষ্টিতে চাঁনখারপুল, বকশিবাজার, নাজিম উদ্দিন রোড, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ভেতরের পুরো এলাকা, ঢামেক ক্যাম্পাস, আজিমপুরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকেও জলাবদ্ধতা দেখেছি। পানির কারণে ঢামেক এলাকায় রোগীর স্বজনদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন বা ঢাকা ওয়াসার কোনও কর্মীদের দেখিনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতি বছর শত কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এ বছর সড়ক, ফুটপাত ও সারফেস ড্র্রেন নির্মাণে ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে ডিএসসিসি। ইতোমধ্যে প্রায় সব টাকা খরচ করেছে এই সংস্থা। কিন্তু আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না নগরবাসী। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসাও নিজস্ব ড্রেন পরিষ্কারের পেছনে ব্যয় করে বড় অংকের টাকা। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও উন্নয়ন হয় না।
নগরবাসীর অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি থই থই করে ঢাকার রাজপথ থেকে অলিগলিতে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ আর আশ্বাসের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে কোনও সমাধান আসেনি। শুধু ড্রেন পরিষ্কার আর নদী ও খাল দখলমুক্ত করার পরামর্শ ছাড়া কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও রাজধানীজুড়ে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তাদের। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ।