ডিজিটাল প্রশ্নের নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ জেলা প্রশাসনের

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রশ্নফাঁস রোধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এ বছর পরীক্ষার আগের দিন অনলাইনে প্রশ্ন পাঠিয়ে সব জেলায় প্রশ্ন ছেপে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ ব্যবস্থার কারণে পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ মোটামুটিভাবে বন্ধ করা সম্ভব হলেও বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে ডিজিটাল প্রশ্নপত্র তৈরি, ছাপা, সংরক্ষণ ও পরীক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও জনবল বাড়ানোসহ আরও নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে যশোরের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। গত ২৫ এপ্রিল খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে এই চিঠি পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দেশব্যাপী প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে স্থানীয়ভাবে ডিজিটাল ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়। গত ২০ এপ্রিল যশোর জেলায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে পরীক্ষা নিতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে জেলা প্রশাসন।

কেন্দ্রীয়ভাবে নিরাপত্তার সঙ্গে বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপা ও সংরক্ষণে সরকারের ব্যবস্থা থাকলেও জেলা প্রশাসনের একসঙ্গে এতো প্রশ্নপত্র ছাপা ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই।

মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যবস্থায় স্থানীয়ভাবে ২০ সেট প্রশ্ন ছেপে একসঙ্গে পরীক্ষা নিতে হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্রের সফট কপি পাঠিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষার আগের দিন রাতে। এত কম সময়ে নিরাপত্তা রক্ষা করে জেলা প্রশাসনকে ২০ সেট প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করে পরীক্ষা নিতে হয় নির্ধারিত কেন্দ্রের মাধ্যমে।

এ কারণে নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা চেয়ে চিঠি দেয় যশোরের জেলা প্রশাসন।

দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে নিরাপত্তা বাড়াতে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিজিটাল এই পদ্ধতির জন্য স্থানীয়ভাবে প্রশ্নপত্র ছাপাসহ অন্যান্য যে সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে জুনের আগে সম্ভব তা নয়। বিষয়টি চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

যশোরের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্থানীয়ভাবে প্রশ্ন ছেপে একদিনে ৩০ লাখ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার মতো জনবল ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেই। তারপরেও গত পরীক্ষা নিরাপত্তার সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় উন্নত ব্যবস্থা থাকা দরকার। কেন্দ্রীয়ভাবে বিজি প্রেসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলেও আমাদের নির্ভর করতে হয় বেসরকারিভাবে পরিচালিত প্রেসের ওপর। এছাড়া জেলা প্রশাসনে এতো জনবলও নেই। সে কারণে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও জেলা পর্যায়ে তা পরীক্ষার আগের রাতে ছাপানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের এই প্রস্তাবের বিষয়ে সমস্যা সমাধানে শিগগিরই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠাবে মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন- যৌন হয়রানি ইস্যুতে গুরুত্ব নেই বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের