দুর্নীতির মামলায় পূর্ব অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার নয়

মন্ত্রিসভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাদুর্নীতির মামলায় কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা তার নিয়োগকর্তার পূর্ব অনুমতি লাগবে। পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে, কোনও মামলায় কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হলে কোনও অনুমতি ছাড়াই গ্রেফতার করা যাবে। সোমবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব কথা জানান।

আজ মন্ত্রিসভায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এই আইন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সচিবালয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এই আইনের ফলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এই আইনের ফলে দুদক আইন বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে না, তবে কিছুটা বিলম্বিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ফৌজদারি মামলায় যদি মৃত্যুদণ্ড বা এক বছরের অধিক কারাদণ্ড হয়, তাহলে তার চাকরি চলে যাবে। কারাদণ্ড এক বছরের কম হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

আইনে বলা হয়েছে, কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভিন্ন কোনও দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে চাকরি হারাবেন। তবে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে আইনে কোনও কিছু বলা নাই বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা আইনে বলা হয়েছে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে মেধা, দক্ষতা. জ্যেষ্ঠতা ও প্রশিক্ষণ। আইনে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা লাগবে না।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ‘সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান রাষ্ট্রপতির কোটা বলবৎ থাকবে।’ 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি কাজের প্রেক্ষিতে কোনও মামলায় জড়ালে সেই মামলা পরিচালনার ব্যয় সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। তবে, ব্যক্তিগত কারণে কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী মামলায় জড়ালে সেই মামলা পরিচালনার ব্যয় সরকার বহন করবে না।’  

তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে বলা হয়েছে, অবসর গ্রহণের পর কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী বিদেশ ভ্রমণে যেতে চাইলে সেক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি লাগবে না। বর্তমানে কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসর গ্রহণের পর বিদেশ ভ্রমণে যেতে চাইলে সরকারের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’  

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে চাইলে ৩০ দিনের নোটিশে অবসরে যেতে পারবেন এবং সরকার কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বেচ্ছায় অবসরে পাঠাতে চাইলে চাকরির বয়সসীমা ২৫ বছর পূর্ণ হলে তাকে অবসরে পাঠাতে পারবেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিয়োগ যদি রাষ্ট্রপতির কোটায় হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে অবসরে পাঠাতে পারবে। এছাড়া নতুন আইনে যেকোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যেকোনও সময় নিজের ইচ্ছানুযায়ী পদত্যাগ করতে পারবেন । 

আইনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে সংবিধানের ২৯-(৩) অনুচ্ছেদে যা বলা আছে তা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এর আগে তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।