সোমবার (২০ আগস্ট) জজ মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনও রকম দিন যাচ্ছে। ২১ আগস্ট এলে অনেকেই ফোন করেন। খোঁজ খবর নেন। আবার এড়িয়ে চলেন অনেকে। আগে রেন্ট এ কারের গাড়ির চালিয়ে সংসার চালাতেন। এখন গালফ সিকিউরিটি সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নারায়ণগঞ্জ অফিসের গাড়ি চালান। ২১ আগস্ট হামলার ঘটনায় প্রথমে আসামি হয়ে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, তেমনি সাক্ষী হয়েও বিএনপি-জামায়াতের লোকদের ভয়ে শঙ্কায় আছি। মা (জবেদা খাতুন) মারা গেছেন প্রায় আট মাস আগে। মা থাকতেই বিয়ে করেছি। স্ত্রী এখন সন্তান সম্ভবা। ২১ আগস্টের ঘটনায় গ্রেফতারের পর নোয়াখালীর সেনবাগের বসতবাড়িও বিক্রি করে দিয়েছি। মাঝে মাঝেই খুব অনিরাপদ মনে হয় নিজেকে।’
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ এ ঘটনায় জড়িত সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে জজ মিয়া বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের দিন ঘনিয়ে এসেছে। আশা করি এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। এ মামলার রায় হলে পরে খালেদা জিয়া ও বাবরসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করবেন বলে জানান। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি মামলাটি করবেন।
নিজের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন প্রসঙ্গে জজ মিয়া বলেন, ‘আমার দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ২১ আগস্ট মামলায় আমাকে আসামি বানানো হয়। অমানবিক নির্যাতনের মুখে ভুয়া জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে আমার সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। ন্যয় বিচারের অপেক্ষায় অপেক্ষায় থেকে অনেকগুলো বছর নিজের জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমি সরকার পক্ষের সাক্ষী। হয়তো অচিরেই এ মামলার রায় হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্যের জয়।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এক জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনার দিন ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন।