বিএনপি-জামায়াত মাদ্রাসায় একটা ইটও লাগাতে পারে নাই: শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির আলোচনা সভা



মাদ্রাসার উন্নয়নে বিএনপি-জামায়াত একটি ইটও লাগাতে পারেনি বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, ‘আমি ৯ বছর ঘুরে বেড়াচ্ছি সারা দেশে। বিএনপি-জামায়াত মাদ্রাসার জন্য একটা বিল্ডিং করতে পারে নাই, একটা ইটও লাগাতে পারে নাই। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় দেড় হাজার মাদ্রাসা তৈরি করে দিয়েছি। তাদের (মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের) মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে।’  

শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে হতো একমুখী শিক্ষা। একমুখী শিক্ষা মনে এই নয় যে সবাই একই বই পড়বে। একমুখী শিক্ষা মনে সার্বিক ক্ষেত্রে আমাদের যে মৌলিক বিষয়গুলি সেগুলোকে ঠিক রেখে অবশ্যই বৈচিত্র্য থাকবে। কেউ চিকিৎসক হবে, কেউ আলেম হবে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হবে, মানে মূলধারাটা ঠিক থাকবে। কিন্তু সেখানে আমরা কী পেলাম? তাদের বইয়ের মধ্যে আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর কোনও ছোঁয়াই নাই। আমার সন্তান পৃথিবীর উল্টা ইতিহাস পড়ছে। সেখানে আমরা শুরুতেই এসব ঠিক কাজ হতে নিয়েছি।’

সরকার মাদ্রাসার উন্নয়নে ভূমিকার রাখছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক ধারার মাদ্রাসা আছে। আমাদের মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিয়া মাদ্রাসাকে আমরা সমর্থন দেই, বেতন দেই, বিল্ডিং দেই। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় দেড় হাজার মাদ্রাসা তৈরি করে দিয়েছি।’

বিএনপি-জামাতের সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকশনের সময় আসলে দেখবেন তারা কী নিয়ে আসে? গত ইলেকশনে তারা নিয়ে আসলো আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসন। তারা বলছে- নৌকা মার্কায় হাসিনাকে ভোট দিবা না, তাহলে আল্লাহও থাকবে না, মাদ্রাসাও থাকবে না।’

কারিগরি শিক্ষার অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা নিয়ে আমরা চরমভাবে হতাশ ছিলাম। যা পড়ানো হয়, এই পড়ায় চাকরি হবে না। মোট শিক্ষার্থীর এক শতাংশ পড়ে কারিগরি শিক্ষায়। ইউরোপে ৬৫ শতাংশের কম না যারা কারিগরি শিক্ষায় যায়, আর বাকিরা উচ্চ শিক্ষায় যায়। তো এই এক শতাংশ নিয়ে আমরা কী করবো? আমরা ব্যাপকভাবে ড্রাইভ দিলাম, দিয়ে দেখলাম অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কারিগরি পড়াতে চান না। তারা মনে করেন- তাদের ছেলে কারিগর বা মিস্ত্রি হবে নাকি! তারা মনে করেন- তাদের ছেলের বড় ডিগ্রি লাগবে। তখন ধারণা ছিল, বড় ডিগ্রি থাকলেই শিক্ষিত, বড় চাকরি পাওয়া যাবে। আমাদের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি। তারা যে চাকরি চায়, সেই চাকরি তো এই শিক্ষা দিয়ে লেলে না, তাদের দক্ষতা থাকা লাগবে। আমাদের দেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে বিদেশ যাচ্ছে কিন্তু তিন ভাগের এক ভাগ বেতনে চাকরি পাচ্ছে। আবার যারা ফিলিপাইন থেকে যাচ্ছে, তারা বেশি বেতন পাচ্ছে। কারণ হলো দক্ষতা। আমরা ক্যাম্পেইন করলাম, যার ফলে এখন কারিগরিতে শিক্ষার্থী বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ড. আব্দুল খালেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদসহ আরও অনেকে।