রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প শ্রমিকদের মজুরি শতভাগ বাড়লো

সংসদে শ্রম প্রতিমন্ত্রীরাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সংসদে ‘পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০১৮’ পাস হয়েছে। এতে সরকারি শ্রমিকদের বেতন শতভাগ বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত জুলাই মাসে বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়। নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মজুরি ১১ হাজার ২০০ টাকা। সরকার গঠিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ করে।

বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ৪ হাজার ১৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬০০ টাকা পাচ্ছেন।

শ্রমিকদের এই মজুরি ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এবং ভাতা ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীর মতো শ্রমিকরাও নববর্ষ ভাতা পাবেন।

২০১৫ সালে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ানোর পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে চেয়ারম্যান করে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫’ গঠন করা হয়।

এই কমিশন গত বছরের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম ৮ হাজার ৩০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬০০ টাকা মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করেছিল কমিশন।

এর আগে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০’ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ মজুরি ৫ হাজার ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছিল।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন এবং বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনে কর্মরত শ্রমিকরা এই আইনের আওতায় পড়বেন বলে প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সময়ের নিরিখে ২০১২ সালের মজুরি কাঠামো বর্তমানে শ্রমিকদের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয় বিধায় সরকার নতুন মজুরি কাঠামো প্রবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করে। এ উদ্দেশ্যে গঠিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।