আপদকালীন সার সংরক্ষণে আরও ৩৪টি গুদাম

সার গুদাম, ফাইল ছবিসর্বোচ্চ চাহিদার মৌসুমে ইউরিয়া সারের সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং সংরক্ষণের জন্য আরও ৩৪টি আপদকালীন গুদাম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম এই ৬ বিভাগের ৩৪টি জেলায় গুদামগুলো নির্মাণ করা হবে। গুদামগুলো নির্মিত হলে আপদকালীন সময়ের জন্য আরও ৮ লাখ মেট্রিক টন সার মজুত নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোসহ দ্রুত সময়ে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা সহজ হবে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সারের বাৎসরিক চাহিদা ২৫ লাখ টন এবং আপদকালে সার মজুদ রাখতে হয় ৮ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এর মাধ্যমে এই ৩৩ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সরসরবরাহ ও মজুত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে ২৫টি গুদামে সার সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যার ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৩.৭ লাখ মেট্রিক টন।

বিসিআইসি সূত্রে জানা গেছে,  দেশের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ২৪টি আপদকালীন গুদামে  সার সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া বিসিআইসি’র নিজস্ব ৬টি ইউরিয়া সার কারখানায় প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন সার উৎপাদিত হচ্ছে। বাকি ১৫ লাখ টন সার বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এ হিসাবে বছরে ২৫টি গুদাম ও ৬টি কারখানা থেকে মোট ২৩-২৪ লাখ টন ইউরিয়া সার কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়।

সূত্র জানায়, প্রায় ৮ লাখ টন ইউরিয়া সার সবসময় মজুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সার কারখানা ও গুদামে পর্যাপ্ত স্থানের অভাবে খোলা জায়গায় সার রাখতে হয়। এতে সার জমাট বেঁধে যায়, সার অপচয় হয় এবং আদ্রতার কারণে সারের গুণগত মান নষ্ট হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এসব কারণেই ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি নতুন বাফার গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বিসিআইসি। প্রকল্পটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন বিসিআইসি বাস্তবায়ন করবে। ২০২১ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,  সার সংরক্ষণের জন্য ৩৪টি বাফার গোডাউন নির্মাণের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় ২ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আপদকালীন সময়ের জন্য বাড়তি ৮ লাখ টন সারের মজুত নিশ্চিত হবে, যাতে দেশে সারের মজুদ সুনিশ্চিত করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিপূর্বক খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে প্রান্তিক কৃষকদের হাতে সার সরবরাহ সহজ হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৪ জেলায় জমি অধিগ্রহণ করা হবে ১৬৯.৯ একর। ৩৪টি সাইট অফিস নির্মাণ করা হবে কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ কেনা হবে। এছাড়াও আনুষাঙ্গিক কাজ তো রয়েছেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘প্রকল্পটি খুব প্রয়োজন ছিল। কারণ আপদকালীন ইউরিয়া সার মজুতের  জন্য প্রয়োজনীয় গুদাম দেশে নাই। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের কৃষকদের মাঝে সার বিতরণ দ্রুত ও সহজ হবে।’