ইসিতে ৫৪৩ জনের আবেদন নিয়ে শুনানি শুরু আজ

নির্বাচন কমিশনএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মোট ৫৪৩ জন আপিল করেছেন। এসব আবেদন নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে শুনানি শুরু হচ্ছে।

কমিশন আজ ৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর শনিবার পর্যন্ত তিনদিনে এসব আপিল আবেদন শুনানি শেষে নিষ্পত্তি করবে। বুধবার সন্ধ্যায় কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ আপিল শুনানি করবেন। এসময় ইসি সচিবালয়ের সচিবও উপস্থিত থাকবেন। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ১১ তলায় এ লক্ষ্যে এজলাস তৈরির কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা গত ৩ ডিসেম্বর ৮৪ জন, ৪ ডিসেম্বর ২৩৭ জন এবং আজ শেষ দিনে ২২২টি আবেদন দায়ের করেন।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ে ৫৪৩টি আপিল আবেদন আমরা পেয়েছি। পুরো কমিশন ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর তা শুনবে। শুনানি শেষে আপিলের রায় সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হবে।’ রায়ে সার্টিফাইড কপি সরবরাহের বিষয়ে সচিব বলেন, ‘যাদের আপিল আবেদন নামঞ্জুর হবে (অর্থাৎ রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে) তাদের রায়ের নকল কপি যেন দ্রুত দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা থাকবে।’

তিনি জানান, আপিল আবেদনের ক্রমিক নম্বর ১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত শুনানি চলবে ৬ ডিসেম্বর, ১৬১ থেকে ৩১০ নম্বর পর্যন্ত ৭ ডিসেম্বর এবং ৩১১ থেকে ৫৪৩ নম্বরের শুনানি হবে শেষ দিন ৮ ডিসেম্বর। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে সবার শুনানি শেষ করা হবে। সেক্ষেত্রে শুনানি শেষের জন্য নির্ধারিত সময়ক্ষণ নেই। যতক্ষণ লাগবে ততক্ষণ শুনানি চলবে।

৫৪৩টি আবেদনের মধ্যে অধিকাংশই মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে। তবে প্রার্থীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কতজন এবং দলভিত্তিক কতজন প্রার্থী আবেদন করেছেন তা জানা যায়নি।

এর আগে ২৮ নভেরের মধ্যে ৩ হাজার ৬৫ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ে ৭৮৬ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ফলে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ২৭৯ জনে।

দেশের ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া দুই হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থীর সংখ্যা মধ্যে বাতিল হয় ৪০২ জন। স্বতন্ত্র হিসেবে দাখিল করা ৪৯৮ জনের মধ্যে ৩৮৪ জন বাতিল হওয়ার পর বৈধ প্রার্থী রয়েছে  ১১৪ জন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২৬৪টি আসনে ২৮১ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকার বৈধ প্রার্থী ২৭৮ জন, বাতিল ৩ জন। বিএপির ২৯৫টি আসনে ধানের শীষে ৬৯৬ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৫৫৫ জন, বাতিল হয়েছে ১৪১ জন। জাতীয় পার্টি ২১০ আসনে ২৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে বৈধ প্রার্থী ১৯৫ জন, বাতিল হয়েছে ৩৮ জন।

উল্লেখ্য, ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনি এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।