বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার: মিলার

কক্সবাজারে রাষ্ট্রদূত মিলার

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রতি জোরালো সমর্থন প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার। বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) এই সমর্থন প্রকাশের আগে গত মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর)  থেকে তিন দিনের কক্সবাজার সফরকালে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কয়েকটি শিবির ও স্থানীয় জনপদ পরিদর্শন করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ শক্তিশালী সম্পর্কের পেছনে ক্রিয়াশীল রয়েছে অভিন্ন স্বার্থ।’  

মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বলা হয়, এই সফরে রাষ্ট্রদূত কোনারপাড়ায় গিয়ে ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেওয়া অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখেন। ওই রোহিঙ্গাদের ঠিক পেছনেই উঁচু সীমান্ত বেড়া তৈরি করা হয়েছে।

এই সফরের মাধ্যমে তিনি চলমান ত্রাণ তৎপরতার জটিলতা ও বিশাল মাত্রা সম্পর্কে একটি ধারণা পান। রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি এসে পৌঁছানো শরণার্থীদের কাছ থেকে মর্মস্পর্শী কাহিনী শোনেন।  

এছাড়াও তিনি শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলার চলতি বিষয় ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে জাতিসংঘ এবং সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

কক্সবাজারের বৈঠকগুলোতে রাষ্ট্রদূত মিলার ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে আসা সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ যে অনন্য উদারতা দেখিয়েছে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাঁচ জন জেনারেল এবং সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত মিলার জোর দিয়ে বলেন, ‘শরণার্থী সংকটের গোড়ার কারণগুলোর সমাধান করা মিয়ানমারের দায়িত্ব। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ, দেশের ভেতরে চলাফেরার স্বাধীনতা ও জীবিকা অর্জনের সুযোগসহ আনান কমিশনের প্রধান সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন।’

এছাড়াও নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে শরণার্থীদের সম্পূর্ণ স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের অব্যাহত অঙ্গীকারকে স্বাগত জানান মিলার।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে চলমান সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনপদগুলোর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার দিয়েছে বলেও জানানো হয়। এছাড়া উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে দিচ্ছে বার্ষিক ২০ কোটি ডলারের বেশি।

রাষ্ট্রদূত মিলার ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন।রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এটি ছিল তার প্রথম সফর।