নির্বাচনে সন্ত্রাসী ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা





একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনগত দুই বছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনেকটা চাপা পড়ে থাকলেও নির্বাচনের কারণে তা আবারও মাথা চাড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
বৈশ্বিক থিংক ট্যাংক ইন্সটিটিউট ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড পিস প্রকাশিত ‘গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স ২০১৮’ (বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক) অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ২৫। গত বছর এই অবস্থান ছিল ২১। এই সূচক অনুযায়ী সংখ্যা যত বেশি হবে পরিস্থিতির তত উন্নতি বোঝাবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারের শক্ত পদক্ষেপের কারণে দেশে বেশি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ঘটনাগুলো আভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে ঘটে থাকে এবং আমি আশঙ্কা করছি নির্বাচনের কারণে এ ধরনের ঘটনা বাড়তে পারে।’
এ ধরনের ঘটনা ঠেকানোর জন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে— এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসীরা প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অর্থের যোগান পেয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কিছু সাহায্য সংস্থা ওই সন্ত্রাসীদের তহবিলের যোগান দিয়ে থাকে। এছাড়া উগ্র মৌলবাদে বিশ্বাসী বাংলাদেশিরাও বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহ দেশে পাঠিয়ে থাকে।’
বর্তমান সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৩৫টি অপারেশনের কারণে অনেক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ওইসব অপারেশনের কারণে বর্তমানে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বের অভাব আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।’ জনসচেতনতার কারণেও সন্ত্রাসী ঘটনা কম ঘটছে বলে মত দেন তিনি।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশে মোহাম্মাদ শহীদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের সমাজ সন্ত্রাসী ঘটনা সমর্থন করে না এবং বাংলাদেশে কোনও আইএসের সংস্থা নেই।’ তিনি বলেন, ‘এখানে সন্ত্রাসী ঘটনা রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।’
ইন্সটিটিউট ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড পিস প্রকাশিত ‘গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স ২০১৮’ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ৫.৬৯৭। গত বছর এটি ছিল ৬.১৮১। স্কোর যত কম হবে সেই দেশে সন্ত্রাসী ঘটনা তত কম।
বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ডে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেশি। আইএস, তালেবান, আল-শাবাব এবং বোকো হারাম পৃথিবীর চারটি ভয়ানক সন্ত্রাসী গ্রুপ যারা বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য দায়ী।