সা’দপন্থীদের প্রতিহত করতে সরকারকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম আহমদ শফীর

মাওলানা আহমদ শফী

তাবলিগ জামাতের সা’দপন্থীদের প্রতিহত করার দাবি তুলে সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী। সোমবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় আহমদ শফীর সভাপতিত্বে তাবলিগ ইস্যু নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে বৈঠক চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। বৈঠকে সাতটি সিদ্ধান্ত হয়। হেফাজতের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে হেফাজত নেতা, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) মজলিসে আমেলা (নির্বাহী কমিটি), আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়ার সদস্য, হেফাজতপন্থী কওমি আলেম ও সা’দবিরোধী তাবলিগের মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।


বৈঠকে সা’দবিরোধীদের প্রতিহত করতে সাতটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত হচ্ছে— ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সংর্ঘষের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাবলিগের সা’দ অনুসারী শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, খান শাহাবুদ্দিন নাসিম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন ও ইউনুস সিকদার এবং সা’দ অনুসারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সা’দবিরোধীদের নির্ধারিত দুই পর্বে ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত করা এবং ‍ ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতের সুযোগ দেওয়া।
উল্লেখ্য, সা’দবিরোধীরা ইজতেমার জন্য প্রথম পর্বে ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ২০১৯ এবং দ্বিতীয় পর্বে ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছিল।
বৈঠকের অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে— মাওলানা সা’দ ও  বাংলাদেশে তার অনুসারীদের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ফতোয়া দেওয়া এবং তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা।  তাবলিগে সৃষ্ট সংকট ও টঙ্গীতে সংর্ঘষের বিষয়গুলো অব্যাহতভাবে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা। প্রত্যেক এলাকায় আলেম ও তাবলিগের সাথীরা সমন্বিত জামাত বের করা। টঙ্গীতে সংর্ঘষের ঘটনায় সা’দবিরোধীদের বিচারের আওতায় আনা।
সাত দিনের মধ্যে সরকারের কাছে পেশ করা এসব দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আরও  কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়।
বৈঠক প্রসঙ্গে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘তাবলিগ ও আলেমদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশি কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। আমরা আশা করছি, সরকার টঙ্গীতে সংর্ঘষের ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, খান শাহাবুদ্দিন নাসিম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন ও ইউনুস সিকদার এবং সাদ অনুসারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঘোষিত ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত করে মাঠ প্রস্তুতির জন্য কাজ করার সুযোগ দেবে।’
বৈঠকে বেফাকসহ সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী, হেফাজত মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, বেফাক মাওলানা আবদুল কুদ্দস, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া,তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের আহমদ ও মাওলানা ওমর ফারুক, হেফাজত নেতা  মাওলানা আব্দুল হামিদ, আহমদ শফীর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানী, বেফাকের মাওলানা জোবাইর আহমদ চৌধুরী, গহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমীন প্রমুখ।