সড়ক ছেড়েছেন পোশাক শ্রমিকরা, যান চলাচল স্বাভাবিক





শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিক হয় যান চলাচলরাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের অবরোধ শেষে শনিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর পর থেকে সড়কে যান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বেতন কাঠামোতে বৈষম্য দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে শনিবার সকালে মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের সামনে, টোলারবাগ, শেওড়াপাড়া ও মিরপুর-১৪ নম্বর এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন। তবে পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকিনাক্যালের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট লিমিটেড কোম্পানির শ্রমিকরা সড়কে চলে আসেন। তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেন। কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, সকালে চন্দন নামে এক হেলপার সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বেতনের দাবি করলে তাকে মারধর করা হয়। তার মাথা ফেটে যায়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে আসেন। সড়ক অবরোধ করেন।
বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শ্রমিককে যাত্রীবাহী মিনিবাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ আসে। তবে শ্রমিকের সংখ্যা বেশি থাকায় তখন পুলিশ কোনও অ্যাকশনে যায়নি। পরে পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়ানো হয় ওই এলাকায়। এরপর শ্রমিকদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশ কথা বলে তাদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে। বেলা ১টার দিকে বহিরাগত কিছু যুবক তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। বেলা ২টার দিকে মিরপুর রোডে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সেলিমুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কিছু সময়ের জন্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।’
বিক্ষোভরত পোশাক শ্রমিকরাএদিকে, মিরপুর ১৪ নম্বরেও শ্রমিকরা সকালে সড়ক অবরোধ করে। তবে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে দুপুরে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
বেতন কাঠামোতে বৈষম্য দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ৬ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন পোশাক শ্রমিকরা। তাদের এ বিক্ষোভ নিরসনে গত মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) শ্রম ভবনে পোশাক শ্রমিক, মালিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, গত ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামোতে কোনও বৈষম্য বা অসঙ্গতি থেকে থাকলে এ মাসের মধ্যেই তা সংশোধন করা হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত গ্রেডিংয়েই বেতন পাবেন শ্রমিকরা। বৈঠকে এ সমস্যা সমাধানে কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কমিটিতে গার্মেন্টস মালিকদের পাঁচজন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাঁচজন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব থাকবেন। এই কমিটি এ মাসের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের জন্য সরকার ঘোষিত বেতন কাঠামোর কোনও গ্রেডের মধ্যে অসঙ্গতি থাকলে তা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন জমা দেবে।

আরও পড়ুন...

আজও রাস্তায় নেমেছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা