পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর

গোলাম দস্তগীর গাজী (ছবি: সংগৃহীত)পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার সর্বত্র নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি বলেন, ‘পাট আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমাদের এই সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য প্যাকেজিং শিল্পের সর্বত্র পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করার প্রয়োজন আমরা সবই করবো। একইসঙ্গে সরকারি যেসব জুট মিল আছে সেগুলোর উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পাটের পণ্যের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সামনে যেন আর কোনও কারখানা বন্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, পাটের পণ্য যতো বেশি ব্যবহার হবে তত বেশি পাটের সমৃদ্ধি বাড়বে। এজন্য বেশি বেশি পাট পণ্য ব্যবহার করতে হবে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে থেকেই পাটখাতের উন্নয়নে মনোযোগী হয়। ২০১৬ সালে পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক আইন ২০১০ করা বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০-এর আওতায় ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার , চিনি , মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুড়া মোট ১৭ (সতের) টি পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । গত ৬ আগস্ট, ২০১৮  পোলট্রি ও ফিস ফিড  সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয় । এ দুটি পণ্যসহ মোট ১৯ (উনিশ) টি  পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার পাটকে তথা এই সোনালী আঁশকে যতো গুরুত্ব দিয়েছে অন্য কোনও সরকার এতো গুরুত্ব দেয়নি।  

পাট উৎপাদনে কৃষকদের সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মাটি পাট উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্য ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে পাট শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। এছাড়া কৃষকরা যেন তাদের ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করার জন্য বহুমুখী পাটজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করা হবে। ফলে অর্থনৈতিকভাবেও দেশ লাভবান হবে ।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বারেক খান বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পাট শিল্পে উৎপাদিত পাট পণ্যের ৯০ শতাংশ নির্ধারিত মূল্যে সরকার কিনে নেয়। সেজন্য তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে কোনও ধরনের সমস্যা হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে সরকার সরাসরি কৃষক বা শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে না। এজন্য আমাদেরকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া পণ্য তৈরির খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই শিল্প টিকে রাখা সম্ভব নয়।