১৯৭২ সালের সংবাদপত্রে দেখা যায় ১৭ মার্চ দিনটিতে পার্শ্ববর্তী দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এসেছিলেন সফরে। তার উপস্থিতিতে সারাদিনই রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তবে এরই মাঝে স্বজন, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান তিনি।
প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুর জন্য ভারত থেকে সেদিন ফল আর মিষ্টি উপহার নিয়ে এসেছিলেন। দৈনিক বাংলার ১৮ মার্চের পত্রিকা বলছে, বঙ্গবন্ধুর ৫৩তম জন্মবার্ষিকী পালন হয় সে বছর। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে ফল ও মিষ্টি উপহার দেন। সেগুলো তিনি ভারত থেকেই নিয়ে আসেন, সেখানকার কোটি মানুষের শুভেচ্ছা, বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের নিদর্শন স্বরূপ।
পত্রিকায় স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আয়োজন সম্পর্কে লিখেছে, সকালে শত শত অনুরাগী সেদিন সমবেত হয় ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বরের বাড়ির সামনে। হাসিমুখে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার আবার জন্মোৎসব কিরে? আয় আয় তোরা আমার কাছে আয়। প্রতিবেদনের বলা হচ্ছে, এ যেন নেহায়েত কোনও ব্যক্তির আমন্ত্রণ নয়, যেনো ছিল একটি সাগরের আহ্বান। এসময় উপস্থিত সবাই তার হাতে তুলে দিল ফুল আর গলায় পরিয়ে দিল মালা।
এর আগে ৪৭তম জন্মবার্ষিকীর দিনে (১৯৬৭ সালের ১৭ মার্চ) ডায়েরিতে বঙ্গবন্ধু লিখেছিলেন, জন্মবার্ষিকী তিনি কোনোদিনই নিজে পালন করেননি। বেশি হলে তাঁর স্ত্রী ওই দিনটাতে তাঁকে ছোট্ট একটি উপহার দিতেন। বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করতেন জন্মদিনে সময় বাড়িতে থাকতে।
ঢাকা সিটি আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালন করছে বলে খবরের কাগজের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন বলে ডায়রিতে উল্লেখ করে করেন। বঙ্গবন্ধুর ধারণা, তিনি জেলে বন্দি বলেই দল থেকে জন্মদিন পালন করা হয়েছে। দল জন্মদিন পালন করেছে দেখে তিনি হেসেছিলেন বলেও ডায়রিতে উল্লেখ করেন। জন্মদিন পালনের বিষয়টিকে তিনি ডায়রিতে উল্লেখ করেছিলেন এমনভাবে যে, ‘আমি একজন মানুষ, আমার আবার জন্মদিবস!’
পত্রিকার ছবি: সৌজন্যে ইন্টার ন্যাশনাল ক্রাইম স্ট্র্যাটেজি ফোরাম ও সেন্টার ফর জেনোসাইড