কার্যকরী সভার মধ্য দিয়ে ফের সচল হলো ডাকসু

ডাকসুর কার্যকরী সভাপ্রায় তিন দশক পর আবার সচল হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। শনিবার (২৩ মার্চ) ডাকসুর কার্যকরী সভার মধ্য দিয়ে এর কার্যকারিতা শুরু হলো। বেলা ১১টার কিছু পর ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ের বিপরীত পাশের রুমে এই সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।

শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাকসুর জিএস গোলাম রব্বানী। এরপর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর রাব্বানী কেন্দ্রীয় সংসদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় জিএস সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেন। এক বছরের জন্য অনুমতি দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান।

ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন, সভা শেষে ডাকসু নেতারা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে, শিখা চিরন্তন ও শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।ডাকসুর কার্যকরী সভা

ডাকসু ভবনের চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার আবুল কালাম আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সভার যাবতীয় প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করা  ছিল। নবনির্বাচিত নেতাদের বরণ করে নিতে সার্বিকভাবে প্রস্তুত করা হয় ডাকসু ভবন। ভবনটির চারপাশের দেয়ালে ও ভেতর রঙ করা হয়েছে। দেয়ালে করা হয়েছে বিভিন্ন কারুকাজ। নিরাপত্তার জন্য ভবনে সিসি ক্যামেরাসহ দরজায় লাগানো হয়েছে নতুন তালা। তবে দ্বিতলবিশিষ্ট ভবনটির দ্বিতীয়তলার যে আটটি কক্ষ থেকে পরিচালিত হবে ডাকসুর কার্যক্রম সেখানে এখনও কোনও আসবাবপত্র রাখা হয়নি। ডাকসু নেতাদের পছন্দ অনুযায়ী আসবাবপত্র আনা হবে।

উল্লেখ্য গত ১১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের পর শনিবার (২৩ মার্চ) এই মেয়াদের প্রথম কার্যকরী সভার মাধ্যমে দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবারও যাত্রা শুরু করলো ডাকসু। এর আগে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। সেবছর ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতনের পর শুধু ডাকসু নয়, কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। গত ১১ মার্চ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রাণ ফিরে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র সংসদের।

এই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় পদের ২৩টিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করলেও বাকি দুটি পদের মধ্যে ভিপি হিসেবে জয়লাভ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে জয়লাভ করেন আকতার হোসেন। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং সহ-সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের ঢাবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এছাড়া হল সংসদে ১৮টি হলের মধ্যে ৯টি হলেই ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল জয়ী হয়।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন।