এফ আর টাওয়ারের ১৯ থেকে ২৩ তলা অবৈধ: রাজউক-বুয়েটের তদন্ত কমিটি

এফ আর টাওয়াররাজধানীর বনানীতে আগুন লাগা এফ আর টাওয়ারের নকশা একটিই, যেটিতে ১৮ তলা পর্যন্ত অনুমোদন রয়েছে। ১৯ থেকে ২৩তলা পর্যন্ত অবৈধ ও অনুমোদনের কোনও নকশা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বুয়েট ও রাজউকের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ তদন্ত ক‌মি‌টি।

তদন্ত কমিটি বলছে, এই ভবন ভাঙা লাগবে না। কিছু সংস্কার করে তারপর ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।

সুপারিশগুলো হলো, বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারের অবকাঠামোগত, অগ্নি ও ইলেক্ট্রটিক ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট (ডিইএ) আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। ডিইএ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মজবুত (রেট্রোফিটিং) কাজ আগামী ১৫০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ দুটি সুপারিশ বস্তবায়ন না করা পর্যন্ত ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিইএ কমপ্লিশান সার্টিফিকেট এবং রেট্রোফিটিং কমপ্লিশান সার্টিফিকেট দেওয়ার পর ভবনটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

তদন্ত কমিটি সদস্য ও বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের ফাইন্ডিং এর ওপর আমরা সুপারিশ দিয়েছি। ১৯ থেকে ২৩ তলার কোনও বৈধতা নেই। তবে ভবটি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভাঙতে হবে না। সংস্কারের জন্য ৫ মাস সময় ও কমিটি চারটি সুপারিশ করেছে। ’

কেবল ১৯ তেকে ২৩ তলার অবৈধ অংশ নয়, আরও কিছু ত্রুটি পাওয়া গেছে উল্লেখ করে ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘ভবনটির একটিমাত্র নকশা পেয়েছি। ভবনটির মোট ১৮ তলা অনুমোদন রয়েছে। নকশা হলো মাটি থেকে দুই তলা ও উপরে ১৮ তলা। ২৩ তলার কোনও নকশা পাওয়া যায়নি। গত ২ এপ্রিল আমরা তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছি। বর্তমানে এটি অফিসিয়ালি রাজউকের কাছে রয়েছে।’

ফায়ার ইলেক্ট্রিকাল ও সংস্কারের কিছু কাজ করতে হবে উল্লেখ করে ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী আরও বলেন, ‘আমরা  ভবনে আরও বেশি কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি পেয়েছি। এজন্য সুপারিশে ৫ মাস সময় বেঁধে দিয়েছি। এরমধ্যে তারা যা যা করার তা সংস্কার করে তারপর ভবনটি ব্যবহার করতে পারবে।’

Infoভবন ভাঙা লাগবে না উল্লেখ করে ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘ভাঙার কোনও প্রশ্নই আসে না। তবে, কিছু কাজ করতে হবে।’

রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটি এ প্রতিদেন দেন। কমিটিতে রাজউকের তিনজন কর্মকর্তা ও বুয়েটের তিনজন শিক্ষক রয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ হেলালী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ।
প্রতিবেদনটির বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদনটি পেয়েছি। কিন্তু এখনও আমি খুলিনি। মন্ত্রী মহোদয় (গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম) এটি প্রকাশ করবেন। ’

প্রসঙ্গত: ২৮ মার্চ এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগে। এতে ২৬ জন মারা যান।








আরও পড়ুন: 

আগেও আগুন লেগেছিল এফ আর টাওয়ারে

অনুমোদনের একটি ফটোকপি ছাড়া আর কিছুই দেখাতে পারেনি রূপায়ণ