শুনানিতেই আটকে আছে রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিপূরণের মামলা

আদালতসাভারের রানা প্লাজা ধসের পর ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা মামলাটি তিন বছর ধরে হাইকোর্টের শুনানিতেই আটকে আছে। বেশ কয়েকবার মামলাটির শুনানি শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা এগোয়নি। ফলে উচ্চ আদালতে অন্যান্য মামলা জটের আড়ালে ক্ষতিপূরণের এ মামলাটি শুনানিতে আটকে আছে।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে প্রাণ হারায় ১ হাজার ১৭৫ জন এবং আহত হন হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। পরে ভবন ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টসহ (ব্লাস্ট)বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন মোট চারটি রিট দায়ের করেন।

ওইসব রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। এরপর বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ক্ষতিপূরণ মামলার শুনানি শুরু হয়। সে শুনানিকালে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির মাত্রা ও ক্ষতিপূরণের হার নির্ধারণ করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আদালতের ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসিকে প্রধান করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অধীনে আরও দু’টি উপকমিটি করা হয়। পরে ওইসব কমিটি রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত, নিখোঁজ শ্রমিকের পরিবার এবং স্থায়ীভাবে পঙ্গু হওয়া শ্রমিকদের জন্য ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি ওই ঘটনায় আহত শ্রমিকদের প্রত্যেককে দেড় লাখ টাকা থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেন এ আদালত। 

অথচ ক্ষতিপূরণ চাওয়া এ মামলাটি শুনতে পুনরায় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। ফলে প্রাথমিকভাবে এ মামলার শুনানি আটকে যায়। পরে নিয়ম অনুসারে প্রধান বিচারপতি মামলাটির শুনানির জন্য আরেকটি বেঞ্চ পুনর্গঠন করেন। তবে এরপরও আদালতের কার্যতালিকায় (কজ লিস্ট) না আসায় মামলাটির শুনানি থেমে যায়। 

তবে যত বাধা আসুক না কেন মামলাটির শুনানি নিয়ে হাল ছাড়তে রাজি নন রিটকারীদের অন্যতম আইনজীবী আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন কার্যতালিকায় (কজ লিস্ট) না আসায় মামলাটির শুনানি সম্ভব হচ্ছে না। তবে শিগগিরই আমরা এ মামলার বিষয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছি। রিটকারী আইনজীবীরা একসঙ্গে বসে মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা হাল ছাড়তে রাজি নই।’