রোহিঙ্গা সমস্যায় দেশে ‘ফিলিস্তিন’ তৈরির আশঙ্কা!

রোহিঙ্গা সংকটরোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি ফিলিস্তিনের জন্ম দিচ্ছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন একজন বিদেশি কূটনীতিক। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছ বিষয়টি জানতে চান তিনি।  জবাবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিকদের রোহিঙ্গা নিয়ে মিয়ানমারের মিথ্যাচার ও সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানোর জন্য বুধবার ওই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ।

ওই ব্রিফিংয়ে অন্তত পাঁচজন কূটনীতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন এবং বিষয়টির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চান বলে জানান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘একজন কূটনীতিক মন্তব্য করেন যে প্যালেস্টাইন (ফিলিস্তিন) সমস্যা গত ৭০ বছর ধরে চলে আসছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর সমাধান বের করতে পারেনি। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যাও সেদিকে যাচ্ছে?’

এর উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে আশ্বস্ত করেন যে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত এই সমস্যা নিষ্পত্তি করা হবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, এছাড়াও বিশ্বের বৃহৎ শক্তিরা এই সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্টভাবে কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চান আরেকজন কূটনীতিক।

এদিকে কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পরে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বার বার আশ্বাস দিলেও কথা রাখছে না মিয়ানমার। ছয় মাস আগে তারা ব্রিফিং করে বলেছিল সব ঠিকঠাক করে দেবে। কিন্তু গত মাসের বৈঠকে দেখা গেলো, নতুন কোনও অগ্রগতি হয়নি। এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা, এমনকি নো-ম্যানসল্যান্ডে যারা আছেন তারাও ফেরত যায়নি। তাদের এমন ডাহা মিথ্যা কথা কতক্ষণ সহ্য করা যায়?’

রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে না নিলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখানে মুসলমানরা নয়, মানবতা লাঞ্ছিত হচ্ছে। আপনাদের যদি মানবতার প্রতি দরদ থাকে তাহলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সম্প্রতি মিয়ানমারের মন্ত্রী জাপানে ফিউচার অব এশিয়া ইভেন্টে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা যাচ্ছে না, এর জন্য দায়ী তারাই।’ কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে, মিয়ানমার বার বার কথা দিয়েও কথা রাখছে না।’’

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রাখাইনের ৮০০ গ্রামের মধ্যে দুটো গ্রামের ওপর স্টাডি করা হয়েছে। সেটিও মিয়ানমার করিয়েছে আসিয়ানের মাধ্যমে। মাত্র দুটি গ্রামের ওপরে স্টাডি করে তারা বলছে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সব ব্যবস্থা খুব ভালো করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার কথা রাখেনি।’