চীনের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে: প্রধানমন্ত্রী

নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ৭০ বছরে চীন নিজেকে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।

বুধবার (৩ জুলাই) বেইজিংয়ে লিজেনডেল হোটেলে তার সম্মানে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে চীন প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থী যারা চীনে লেখাপড়া করছে তাদের আমি বলবো এই দেশটির কাছ থেকে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারে, কী করে চীনের জনগণ দিনরাত এত পরিশ্রম করে।’

প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগ দিতে সরকারি সফরে চীনে অবস্থান করছেন। ৫ দিনের এ সফরে চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।

পরারাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কেবল দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নই করছে না, উপরন্তু দেশের পররাষ্ট্র নীতি— সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়— এর আলোকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবেও সামনে এগিয়ে নিচ্ছে।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সহযোগিতায় কর্ণফুলী টানেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আর চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকার করণেই তা সম্ভব হচ্ছে।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা সমাধান এবং মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধানের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

বিগত এক দশকে দেশের চমকপ্রদ আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি দেশ তখনই উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করে যখন এর স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করা এবং ত্যাগ স্বীকার করা শক্তি তথা জনগণের জন্য শুভ শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকে।’

এ সময় তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশে বলবৎ থাকা অপশাসনের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার কমানোসহ নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। বলেন, ‘জাতি ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। আর সে সময়ে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে কোন ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ তার চমকপ্রদ উন্নয়নের জন্য সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। আমাদের এই সাফল্যকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের আরও কাজ করে, আরও শ্রম দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ বাসস