৩১ হাজার পানিবন্দি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, দুর্ঘটনা ঠেকাতে সতর্ক পদক্ষেপ আরইবি’র

গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছেবন্যায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ৩৫০ কিলোমিটার লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এতে করে সাত জেলার ৩১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আরইবি বলছে, মানুষ এবং গবাদিপশুর জীবন রক্ষায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো মাইকিং করার পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ করছে।
আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুঈন উদ্দিন বলেন, বন্যার সময় বৈদ্যুতিক তার এবং পোলের কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যই আমরা প্রতিটি সমিতির মাধ্যমে সব গ্রাহকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা শুধু সতর্ক করলেই হবে না গ্রাহকদেরও সচেতন হতে হবে। এজন্য সচেতন গ্রাহকরা অন্যদের সচেতন করে তুলে তার সামাজিক দায়িত্ব পালন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরইবি সূত্র বলছে, আজ মঙ্গলবার ১৬ জুলাই থেকে রংপুর-১ও ২, দিনাজপুর-১ ও ২, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া-১ ও ২, টাঙ্গাইলের বন্যাকবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব এলাকায় ৩৫০ কিলোমিটার লাইন পুরোপুরি বিদ্যুৎ সবরাহ বন্ধ রেখেছে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এতে ৩১ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হওয়াতে কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনার বন্ধ করে দেওয়া লাইন মঙ্গলবার চালু হয়েছে।
আরইবি বলছে, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এসব লাইনে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে। আরইবির একজন কর্মকর্তা জানান, পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়াতে কক্সবাজারে একটি সাবস্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার তা আবার চালু করা হয়েছে।
এদিকে আরইবি বন্যার সময় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে সাধারণ মানষের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এক বার্তায় তারা জানায়, বৃষ্টির পানিতে পোল এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ভিজে গিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়।
আরইবি বলছে, বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি থেকে নিজে দূরে থাকার পাশাপাশি অন্যদেরকেও দূরে থাকার পরামর্শ দিতে দিতে হবে। গৃহপালিত জীবজন্তু যাতে বিদ্যুতের স্পর্শে না আসতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বর্ষা এবং বন্যার কারণে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বৈদ্যুতিক তারের দূরত্ব কমে গিয়ে নৌকার ছই কিংবা লগি বৈঠার সংস্পর্শে এসে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এ বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। কোন মানুষ বৈদ্যুতিক তারে আটকে গেলে তাকে মুক্ত করার জন্য খালি হাতে স্পর্শ না করে শুকনো কাঠ বা বাঁশ ব্যবহার করা যেতে পারে। যথা শিগগির সম্ভব একজন ইলেকট্রিশিয়ানের সাহায্য গ্রহণ করার বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া কোনও বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়লে, তার ছিঁড়ে গেলে কিংবা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে কাছের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বর্তমানে দেশের সর্বত্র মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে পোল এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ভিজে গিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়। এ সময় কোনও মানুষ কিংবা গবাদি পশু বৈদ্যুতিক খুঁটি কিংবা অন্যান্য সরঞ্জামাদির সংস্পর্শে আসলে তড়িতাহত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। এমনকি এ সকল দুর্ঘটনায় মৃত্যুও ঘটতে পারে। এ পরিস্থিতিতে কিছু সতর্কতা অবলম্বনের জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করেছে আরইবি।