‘দুর্নীতি শব্দটি কীভাবে এলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া’

আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান‘সরল বিশ্বাস’-এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমার উত্তর একেবারে সহজ। একটি প্রশ্নের বিপরীতে আমি যে উত্তরটি দিয়েছিলাম, সেটির ভিডিও ক্লিপ আপনাদের কাছে আছে। সেখানে আমি দুর্নীতি শব্দ উচ্চারণ করিনি। আপনারা দেখতে পারেন। দুর্নীতি শব্দটি কীভাবে এলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া। যারা এনেছেন সেটা তাদের দায়, আমার দায় নেই মোটেও। আমি কোনও ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নই। কারণ আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমি বিষয়টি পরিষ্কার করেছি।’

শনিবার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আয়োজিত দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকেই বলেন সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের কিছু করা হয় না। আমার জানা মতে, আন্ডার প্রসিকিউশন, আন্ডার ইনভেস্টিগেশনের নামে ইনকোয়ারিতে ১০-১৫ জন রয়েছেন সরকারদলীয়।  বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক দলে রয়েছেন ১৫ জন, আরেক দলে রয়েছেন ১২ জন, আরেক দলের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইনকোয়ারিতে আছেন প্রায় ২৫ জন। এছাড়া ঊর্ধ্বতন আমলা থেকে শুরু করে জয়েন সেক্রেটারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন আছেন। ইনভেস্টিগেশনের সময় তথ্য প্রকাশ হলে সেটি বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সেজন্য সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া একটু অসুবিধার বিষয়। এরপরও কীভাবে যেন সেই তথ্য পাচার হয়ে যায়। সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সেই দায় আমার।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুদক আকাশ থেকে উড়ে আসেনি। এখানে যারা কাজ করেন, তারা কিন্তু বিদেশ থেকে আসেনি। আমরা সবাই এই সমাজের মানুষ। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান। আমরা এই সমাজেরই অংশ। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়,আমার এখানে তা হয় না— কথাটা ঠিক নয়। ছোট গাছ উপড়ে ফেলার যতটা সহজ, বট গাছ উপড়ে ফেলাটা কঠিন। তাই বলে যে, আমরা বট গাছ ধরছি না তা নয়।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুদক আইন যারা করেছেন, তারাও যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করেই করেছেন। আমার বলতে দ্বিধা নেই এমন কোনও নথি আমি পাইনি যেখানে ফলস পাওয়া যায় না। এখন আপনি যদি বলেন অ্যাকশন নিন। তাহলে আমার ৪৭৪ জন স্টাফের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। তাহলে তো আর প্রতিষ্ঠান থাকবে না।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হয় সেই বিবেচনায় আপনারা নিউজ করবেন। কারণ, প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের, সরকারের নয়। ব্যক্তির ক্ষতি হলে অসুবিধা নেই। আমাদের ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা কাটানোর জন্য কী করা যায় সেটা আপনারা বলুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি দমন সম্ভব না।’ 

আলোচনা সভায় আপিল বিভাগের বিচারপতি নিজামুল হক, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।