প্রতিমন্ত্রী ও সচিব ঢাকায় ফিরলে সেই ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

আহমেদ কবীর। জামালপুরের জেলা প্রশাসক থাকাবস্থায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ালে তাকে ওএসডি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ঢাকায় ফিরলে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. মুশফিকুর রহমান রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে আরও নিশ্চিত করেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি হয়ে থাকা জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের প্রতিবেদনটি এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সচিব ফয়েজ আহমেদ দেখেননি।

তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব উভয়ই এখন ঢাকার বাইরে আছেন। তারা ফিরলে প্রতিবেদনটির ব্যাপারে পরবর্তী উদ্যোগ নেবেন।     

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মোবাইল ফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে এখনও প্রতিবেদনটি দেখিনি। আমি এই মুহূর্তে মেহেরপুর থেকে খুলনা যাচ্ছি। ঢাকায় ফিরবো বুধবার। ঢাকায় ফিরে তদন্ত প্রতিবেদনটি দেখে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ রয়েছেন পটুয়াখালী। তিনি ঢাকায় ফিরবেন আগামীকাল মঙ্গলবার।

উল্লেখ্য, আহমেদ কবীর জামালপুরের জেলা প্রশাসক থাকাবস্থায় অফিসের ভেতরেই তার খাস কামরায় (বিশ্রামকক্ষে) এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় থাকার একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারকে। একইসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় গত ২৫ আগস্ট আহমেদ কবীরকে জেলা প্রশাসকের পদ থেকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি করা হয়। এ ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদের তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও ১০ কর্মদিবস সময় বাড়ানো হয়। গতকাল রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। 

জানা গেছে, ড. মুশফিকের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে মাঠ প্রশাসনে মনিটরিংয়ে দুর্বলতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ডিসির কাজের ধরন অনুযায়ী মাঝে মধ্যে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য খাস কামরা থাকতে পারে। তবে সেখানে দরজা বন্ধ করে খাট-পালঙ্কের আয়োজন না করে বড় জোর ইজি চেয়ার বা ডিভান টাইপের কিছু রাখা যেতে পারে। এছাড়া সাবেক ডিসির এই কর্মকাণ্ড প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. মুশফিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, আমাদের সার্বিক পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জমা দিয়েছি। এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না।