ওয়াসাকে নিজেদের ভাবমূর্তি ধোয়ামোছার পরামর্শ সংসদীয় কমিটির

সংসদীয় কমিটির বৈঠকরাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও পয়ঃনিষ্কাশনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসাকে সবার আগে নিজেদের ভাবমূর্তি ধোয়ামোছার পরামর্শ দিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, ওয়াসার নেতিবাচক ভাবমূর্তির কারণে সরকারকে বিব্রত হতে হচ্ছে। এজন্য ঢাকা ওয়াসার নেতিবাচক ভাবমূর্তি কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে কমিটি ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) একক ক্ষমতা খর্ব করে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের সুপারিশ করেছে।

রবিবার (২০ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। সংসদীয় কমিটির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয়ে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। তাদেরকে সব ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধ করে সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

জানা গেছে, ঢাকাবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ, জলাবদ্ধতা নিরসন, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণসহ ওয়াসার বিরুদ্ধে ওঠা নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময়ে কমিটির সদস্যদের প্রশ্নবানে জর্জরিত ছিলেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। ওয়াসাকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের উদ্বৃতি দিয়ে কমিটির সদস্যরা বলেন, ওয়াসার পরতে পরতে দুর্নীতি-অনিয়ম। পানির লাইনে লিকেজ, ওয়াসার পানি পান করার যোগ্য নয়। কাজের কোনও তদারকি নেই। ওয়াসার কারণে সরকারকে বিব্রত হতে হচ্ছে। আমরা সংসদীয় কমিটিও বিব্রত হই এটার জন্য।  

তবে ওয়াসার এমপি দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ মোটেই সত্য নয়। ওয়াসা তার যথাযথ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।’

বৈঠকে ওয়াসার কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ১৮টি প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। ওয়াসা দাবি করে, গণমাধ্যম ঠিক খবর প্রচার করেনি। এ পর্যায়ে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকেও ওয়াসার কর্মকাণ্ড নিয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন এসেছে।

কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ জানান, ওয়াসার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ওয়াসার এমডি এ বিষয়ে তার বক্তব্য দিয়েছেন। কমিটি মনে করে একজনের কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকলে অনিয়ম দুর্নীতি হতে পারে। তাছাড়া সংস্থার অন্যদের মধ্যেও এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়। এজন্য আমরা উপব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে বলেছি।

আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমরা ওয়াসার কেউ যেন দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছি। তাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জল করতে বলা হয়েছে। তাদের পাক-সাফ হতে বলা হয়েছে।’

কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ইসমাত আরা সাদেক, মাহবুব উল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও মুহিবুর রহমান অংশ নেন।