ভূমি জরিপ অধিদফতরের দুই-তৃতীয়াংশ পদই শূন্য

ভূমি জরিপ অধিদফতরভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরে দুই-তৃতীয়াংশ পদই শূন্য। অধিদফতরের আওতায় তিনটি সংস্থার অনুমোদিত সাত হাজার ৪৭৩টি অনুমোদিত পদের মধ্যে সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাগুলোর শূন্যপদ পূরণে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠক ও মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর ও মাঠপর্যায়ে ১৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস, সেটেলমেন্ট প্রেস ও দিয়ারা সেটেলমেন্টে (জেগে ওঠা চরে জরিপ করে) মোট জনবল সাত হাজার ৪৭৩টি। এরমধ্যে দুই হাজার ৪৭৩টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। বাকি ৫০০০টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ২৫৫টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ৫৯৩টি, তৃতীয় শ্রেণির তিন হাজার ৮১টি এবং চতুর্থ শ্রেণির এক হাজার ৭১টি। চলতি অর্থবছরে অধিদফতরের মোট ১০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের শূন্যপদ পূরণ না হওয়ার কারণ হিসেবে নিয়োগবিধি চূড়ান্ত না হওয়ায় শূন্যপদ পূরণ ও পদোন্নতি স্থগিত আছে বলে জানা গেছে। উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী বাতিল হওয়ায় অধিদফতরের জন্য তিনটি নিয়োগবিধি প্রণয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন বলে রবিবার অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ওই বৈঠকের কার্যপত্র থেকে আরও জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের মোট ১৯ হাজার ৪২০টি পদের মধ্যে ১০ হাজার ১৭৭টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদ ৯ হাজার ২৪৩টি। শূন্য পদের মধ্যে ৪০৯টি প্রথম শ্রেণি, এক হাজার ২০৫টি দ্বিতীয় শ্রেণি, ৫ হাজার ৯৮৬টি তৃতীয় শ্রেণি ও এক হাজার ৬৪৩টি চতুর্থ শ্রেণির। ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনামূলক ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের শূন্যপদ বেশি।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শাহজাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলা ও নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণে নিয়োগ পদোন্নতি আটকে রয়েছে। আমাদের নিয়োগ বিধিমালার খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’ সেখান থেকে অনুমোদন পেলে শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া যাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জনবল সংকটে আমাদের নিয়মিত কাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে নিম্নস্তরের কাজ চালাতে হচ্ছে।’

জানতে চাইলে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদতরের মহাপরিচালক মো. তসলীমুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৮৫ সালের নিয়োগবিধি বাতিল হওয়ার কারণে নতুন নিয়োগ বিধি ছাড়া শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। নিয়োগ বিধি নিয়ে আমাদের ৮০টির মতো মামলা মোকাবিলা করতে হয়েছে। এখনও কয়েকটি মামলা চলছে। তবে, মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আশা করি, সব সমস্যার সমাধান করে নিয়োগ বিধি চূড়ান্ত করে নিয়োগ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে পারবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে মো. তসলীমুল ইসলাম বলেন, ‘জনবল সংকটে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে।’ মাঠ প্রশাসনের কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।