‘একুশ মানে মাথা নত না করা’

1

ভাষার প্রশ্নে আপোষ করেননি রফিক,সালাম, বরকতরা। মায়ের ভাষা রক্ষায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাজপথে নেমেছিল ছাত্র-জনতা। পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন কিন্তু মাথা নত করেননি। তাই একুশ মানে মাথা নত করা নয়। অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করাই একুশের শিক্ষা। আর এই শিক্ষা শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তাদের নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা। একুশের প্রথম প্রহরে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভাষা শহীদদের।

মধ্যরাতে মিরপুর-১ থেকে সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শহীদ মিনারে এসেছেন এস এম রাজিব। তিনি বলেন, আমার মেয়ে ছোট। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সে ঠিক বুঝতে পারছিল না কোথায় যাচ্ছি। কিন্তু আসার পথে ছেলে-মেয়েকে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিকদের আত্মত্যাগের গল্প শুনিয়েছি। বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য তাদের সংগ্রামের কথা বলেছি। তাদের মাথা না নোয়ানোর গল্প শুনিয়েছি। শিশুদের মনে  ভালোবাসা জন্মানো ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তাদেরকে নিয়ে শহীদ মিনার এসেছি।

2

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর বণিক। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েরা ভাষা শহীদদের বীরত্বের গল্প স্কুল থেকে জানছে, পরিবার থেকে জানছে। তবে এখানে আসলে হাজারো মানুষের স্পিরিটটা তাদের মধ্যে কাজ করবে।

বংশাল থেকে আসা পারভেজ আহমেদ বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। ভাষার প্রশ্নে আপোষ করেনি। স্বাধীনতার প্রশ্নে আপেষ করেনি। আজ  স্বাধীন দেশে মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। যাদের আত্মত্যাগে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি, তাদের গৌরবময় আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছি।

3

একুশের প্রথম প্রহরে রাজিব, দীপঙ্কর, পারভেজের মতো হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে দলে দলে মানুষ এসে হাজির হয়েছে শহীদ বেদিতে। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাধারণ মানুষের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয়। সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফিরে যাচ্ছেন তারা।

রাত তিনটার পর থেকে শহীদ মিনারে আসা লোকজনের সংখ্যা কমতে শুরু হলেও ভোরে আবার জনসমাগম বাড়তে শুরু করেছে।