মুজিববর্ষে গৃহহীনদের ঘর করে দিতে দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

 

৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মুজিববর্ষে দেশে কোনও গৃহহীন মানুষ দেখতে চান না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে গৃহহীনদের গৃহনির্মাণে সহযোগিতার হাত বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। আমি চাই এই মুজিববর্ষের ভেতরেই বাংলাদেশে একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না। আমি সেই কাজটাই আপনাদের দিতে চাই।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বা আমাদের অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীর কাছে আমার একটা আবেদন থাকবে। আমি অনুরোধ করবো, আওয়ামী লীগের এত নেতাকর্মী, এত আদর্শের সৈনিক, আপনারা যার যার নিজের গ্রামে, নিজের এলাকায় নিজেরা একটু খোঁজ নেন আপনার এলাকায় কতজন মানুষ গৃহহীন আছেন। কতজন মানুষ গৃহহারা আছেন, ভূমিহীন আছেন। আপনারা একটু খুঁজে বের করেন। তাদের আমরা ঘর করে দেবো। আপনারা পয়সা খরচ করতে না পারলে আমি দেবো। কিন্তু তাদের আমরা ঘর দিয়ে যেতে চাই।

বাংলাদেশে একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে মুজিববর্ষে এটা হতে পারে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার এই কথা পৌঁছে দেবেন সারা বাংলাদেশে। আপনাদের কাছে এটা আমরা দাবি। যে খরচ করতে পারবে না সেখানে আমি টাকা দেবো। যেভাবে পারি দেবো। যারা অর্থশালী, সম্পদশালী, বিত্তশালী আছে তারা তো পারবেন। এই বাংলার মাটিতে কোনও মানুষ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। আমি সারা বাংলাদেশে মুজিব আদর্শের প্রতিটি নেতাকর্মীর কাছে এই আহ্বানটাই রাখবো। এ কাজটা যদি আপনারা করেন এর থেকে বড় সার্থকতা আর হবে না।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চের জনসভা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ৭ মার্চ সভার জন্য যোগাড়-যন্ত্র করতে হয়নি। যে মুহূর্তে ইয়াহিয়া খান পার্লামেন্ট বন্ধ ঘোষণা করে দেয়, সেই মুহূর্তে এ দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে গিয়েছিল। এমনকি সেই সময় স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা হচ্ছিলো, তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, খেলা ফেলে দিয়ে সব মানুষ রাস্তায় এসেছিল। মানুষ সচেতন ছিল, তারা যে ভোট দিয়েছিল, পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল, আর পাকিস্তানি শাসকেরা ক্ষমতা হস্তান্তরে করেছিল টালবাহানা, কাজেই এর বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন সবাইকে বলেছিলেন ৭ মার্চ আমি আমার কথা বলবো। পুরো বাংলাদেশ থেকে মানুষ ছুটে এসেছিলেন নেতা কী নির্দেশনা দেবেন সেটা জানার জন্য। আর সেই সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি সেই দিকনির্দেশনাই দিয়েছিলেন।এই দিকনির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে বড় কথা যেটা ছিল, সবাইকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া। বাংলাদেশে যে গেরিলা যুদ্ধ হবে, সেই গেরিলা যুদ্ধ নিয়ে কী কী করণীয়, খুব স্পষ্টভাবে তিনি সেই নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন। কার কী কাজ সেটাও তিনি বলেছিলেন। আর তিনি যে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তা খুব অভূতপূর্ব ঘটনা। কারণ, তখন যে নির্দেশ ৩২ নম্বর থেকে যেত সেই নির্দেশনায় বাঙালি কাজ করতো। এর বাইরে কোনও কাজ মানুষ করেননি।

শনিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় সূচনায় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মুহম্মদ ফারুক খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান প্রমুখ।