বিদেশগামী কর্মীদের ভিসা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ মন্ত্রণালয়ের

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়প্রবাসীদের মধ্যে যারা ইতোমধ্যে ছুটিতে দেশে ফেরত এসেছেন কিংবা কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাবেন তাদের ভিসা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে রবিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদের একান্ত সচিব আহমেদ কবীর।

আহমেদ কবীর জানান, বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজার পরিচালনায় বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রসারের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী, বিদেশ ফেরত এবং বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়।

আলোচনায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ উল্লেখ করেন, সরকারি সিদ্ধান্ত ও বিভিন্ন নির্দেশনার আলোকে প্রবাসী, বিদেশ ফেরত এবং বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের সামগ্রিক সুরক্ষার জন্য যা যা করণীয় তা সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা হবে।

বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধের জন্য করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের অফিসসমূহ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) এবং সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো সচেতনতা এবং অবস্থা পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ১ মার্চ ও এরপর থেকে যুক্তরাজ্য ব্যতীত অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে থাকা বাংলাদেশিদের আপাতত দেশে না আসার পরামর্শ কার্যকর করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মিশনের শ্রম কল্যাণ উইং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

একান্ত অনিবার্য না হলে প্রবাসী কর্মীরা যাতে আন্তদেশীয় চলাফেরা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন সে বিষয়েও দূতাবাসগুলো প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় বিদেশ থেকে ছুটিতে আসা এবং নতুনভাবে বিদেশগামী কর্মীদের তাদের ভিসার মেয়াদ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কারণ, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং তাঁরা কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন।

বৈঠকে মন্ত্রী ইমরান আহমদ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনার আলোকে সবাইকে, বিশেষ করে প্রবাসী কর্মীদের আতঙ্কিত না হয়ে সরকারের দেওয়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলার অনুরোধ জানান এবং যেকোনও পরিস্থিতিতে সরকার তাদের পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় যাদের জন্য কোয়ারেন্টাইন প্রযোজ্য, তাদের তা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মেনে চলার অনুরোধ জানান মন্ত্রী।

ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে এই সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ ও সুরক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)’র প্রতিনিধিসহ অভিবাসন সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।