স্বীকৃতি পাওয়ার খবরে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে বঙ্গবন্ধুর ধন্যবাদ

Untitledস্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকার করে নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতির ফলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন ও সহযোগিতামূলক অবস্থান সম্ভব হবে, যা দুটি দেশের জন্যই জরুরি।’ এই স্বীকৃতি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দুয়ার উন্মুক্ত করতে নতুন অধ্যায় রচনা করবে বলেও তিনি মনে করেন। এই ঘটনায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ ও গণমাধ্যমকে পৃথকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান— স্বাধীনতা যুদ্ধকালে তাদের শক্তিশালী অবস্থানের জন্য।

এর আগে বঙ্গবন্ধু একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশটির সরকারকে ধন্যবাদ দিতে পারছেন না বলেন জানান। তিনি এও বলেন, ‘মি. নিক্সন ও তার সরকার যদি এখনও সচেতন না হন, তাহলে ইতিহাসের অমোঘ গতি ও যুক্তির সামনে এমনিতেই তাদের পতন হবে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের সৌভাগ্য এটাই যে, দেশটির সংবাদপত্র ও জনসাধারণ এবং মি. কেনেডির প্রগতিশীল সিনেটররা পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ দৃষ্টি দিচ্ছেন।’

444১৯৭২ সালের ৫ এপ্রিল দৈনিক অবজারভারে প্রকাশিত প্রথম পাতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার বিষয়ে সংবাদে বলা হয়— ‘আমি জানতে পেরেছি যে, অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চলেছে। আমি জেনে খুশি হয়েছি।’

ময়মনসিংহে ঘূর্ণিঝড়ের পর নারায়ণগঞ্জে কালবৈশাখী

১ এপ্র্রিল ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর ৫ এপ্রিল কালবৈশাখীর ছোবলে পড়ে নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার আশেপাশের বেশকিছু এলাকা। এই দুর্যোগে নিহতের সংখ্য ৩৪ ও আহতের সংখ্যা ২৫০ বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হয়। ঢাকার ডেপুটি কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় আহতদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রায় এক ঘণ্টাকালের এই তাণ্ডবে ওই এলাকাগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। পোস্তগোলার কাছে একটি কোল্ডস্টোরেজ ধ্বসে পড়লে সেখানে আশ্রয় নেওয়া বেশ কয়েকজনের নিহতের খবর পাওয়া যায়। এলাকাবাসী ত্রাণ পৌঁছানো না পর্যন্ত এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছিল বলেও খবরে প্রকাশ করা হয়।

কালবৈশাখীতে ধ্বসে পড়া ভবন

কালবৈশাখী কবলিত এলাকা দেখলেন বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বিধ্বস্ত নারায়ণগঞ্জ ও তার আশেপাশের এলাকা হেলিকপ্টার থেকে পরিদর্শন করেন। তিনি ৪ এপ্রিল ময়মনসিংহ থেকে ফিরতে পারেননি খারাপ আবহাওয়ার কারণে। ৫ এপ্রিল ফেরার পথে তিনি তাণ্ডবের শিকার এলাকাগুলো দেখেন এবং ঢাকায় ফিরেই উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত চালানোর জন্য যা  যা করণীয়, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেন এবং উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।

সরকারি বাসা ত্যাগের নির্দেশ

৫ এপ্রিল ডেইলি অবজারভারে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারি স্বায়ত্তশাসিত অথবা স্থানীয় প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকার প্রদত্ত সরকারি আবাসন ত্যাগ করবেন। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং খুলনায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাদের নিজের নামে কিংবা স্ত্রীর নামে অথবা সন্তানের নামে ঘরবাড়ি আছে, তাদের সরকার প্রদত্ত আবাসন ত্যাগ করতে হবে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় কর্মরত কর্মকর্তারা ৯ এপ্রিলের মধ্যে আবাসন ত্যাগ করবেন। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা এলাকার কর্মকর্তারা ৯ মে'র মধ্যে সরকারি বাসা খালি করবেন। যারা সরকারের তরফ থেকে বিনা ভাড়ায় আবাসন সুবিধা পেয়ে থাকেন, চাকরির শর্ত অনুযায়ী তারা এর আওতা মুক্ত থাকবেন, তারা এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।