রবিবার (১৭ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, বকশিবাজার, শাহবাগ, বাংলামোটর, কাওরান বাজার ও ফার্মগেট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। দূরত্ব নিশ্চিত না করেই সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। সামাজিক দূরত্ব না মানায় পুলিশকেও কঠোর অবস্থান নিতেও দেখা গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মাদপুর, বকশিবাজার ও বাংলামোটর মোটরবাইক চালকদের জন্য পরিচিত স্থান। এসব এলাকায় রয়েছে অর্ধশত গ্যারেজ। সাধারণ ছুটিতে বেশকিছু দিন গ্যারেজগুলো বন্ধ থাকলেও ইদানিং আবারও সার্ভিসিং শুরু হয়েছে সেখানে। সেখানে দেখা গেছে, একটি মোটরবাইকের পেছনে দু’জন আবার ৩-৪ জন একসঙ্গে কাজ করছেন। কিন্তু কোনও কর্মীর হাতে গ্লাভস বা মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বের তো বালাই নেই সেখানে।
এ বিষয়ে মোটরবাইক মেকানিক আমীর হামজা বলেন, ‘গ্লাভস পরে অনেক সময় ক্রিটিকাল কাজগুলো করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা চলাফেরার সময় যথেষ্ট নিরাপত্তার বিষয়টা খেয়াল রাখি। পেটের দায়ে দোকান খুলে কাজ করতে হচ্ছে। কাজ না করলে তো আর ইনকাম হচ্ছে না। যদি কিছু টাকা ইনকাম করে বাড়িতে পাঠানো যায়, সেখানে বাবা-মা অন্তত ভালোভাবে ঈদ করতে পারবেন।’
আবার বাজার, সবজির ভ্যানগুলোর কাছে একই অবস্থা দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব না মানায় ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে পুলিশকে লাঠিচার্জ করে দোকান বন্ধ করে দিয়েছে।
ভ্যানের সবজি কিনতে আসা সুলতান হোসেন বলেন, ‘আসলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই পথ চলবো এমনটা ভেবেই বাসা থেকে বের হই। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে থাকতে থাকতে কখন যে পাশাপাশি হয়ে যাই, সেটাই বোঝা মুশকিল। আমি ঠিক থাকলেও অন্যজন হয়তো ঠিক থাকছে না। তখন বিষয়টা পাশাপাশি হয়ে যায়।’
সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে কী করা যায়— এমন প্রশ্নে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব মানছে না মানুষ। এটা বাধ্য করে মানাতে হবে। ঢাকা শহরের প্রাইভেটকার চলাচলও নিষেধ করে দেওয়া লাগবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কোনও প্রাইভেটকার চলতে পারবে না। এখন সরকারের উচিত একেবারে হার্ডলাইনে যাওয়া। কোনও সাধারণ ছুটি না, একেবারে লকডাউন করতে হবে। এছাড়া সংক্রমণ কমানোর কোনও উপায় নেই। শুধু লকডাউন করলেই হবে না। লকডাউনের যেসব ক্রাইটেরিয়া আছে, সেগুলোসহ মানতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে যদি কেউ বের হয়, তবে সে ক্ষেত্রে লিখিত প্রমাণ নিয়ে বের হতে হবে। দরকার হলে ১৪৪ ধারা জারি করতে হবে। সরকার চেষ্টা করলে এই বিষয়গুলো মেইনটেইন করতে পারে।’