মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু

ফিরে দেখা ১৯৭২৭ জুন থেকে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হবে। ১৯৭২ সালের ২৩ মে দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর এক সভায় ঐতিহাসিক ৭ জুন পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভা হয়। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে সব থানা এবং ইউনিয়নের প্রধান ও উপপ্রধান যোগ দেন।

সভায় ৭ জুনকে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে সেদিন থেকে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠান বৈপ্লবিক সংগ্রাম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানায়। মুজিববাদের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রধান আব্দুর রাজ্জাক ২৩মে এককর্মী সভায় ভাষণ দানকালে বলেন, পূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া শোষণহীন সমাজ কায়েম করা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর চারটি মূলনীতি বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে তিনি বিপ্লবের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।

১৯৭২ সালের পত্রিকারাজ্জাক বলেন,  মুজিববাদের পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য কৃষক-শ্রমিক রাজ কায়েমের জন্য আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে নতুন করে বলিষ্ঠ শপথ নিতে হবে। বাংলার মানুষের কাছে মুজিববাদের চারনীতি- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ স্পষ্ট করে পৌঁছে দিতে পারলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। 

সরকারকে যথেষ্ট সফল বললেন টনি হেগেন

বাংলাদেশ সরকার যথেষ্ট সফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সাহায্য অভিযানের বিদায়ী প্রধান টনি হেগেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিধ্বস্ত যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে যথেষ্ট সফল হয়েছে। ২৩ মে মঙ্গলবার সকালে তেজগাঁও বিমানবন্দরে বাসস প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন। তিনি জাতিসংঘের সাহায্য কাজ পরিচালনার জন্য পাঁচ মাস বাংলাদেশে ছিলেন।

১৯৭২ সালের পত্রিকা

আস্থা প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিগগিরই দেশে বর্তমান সমস্যার সমাধানে সক্ষম হবেন। বাংলাদেশের খাদ্য সমস্যা উল্লেখ করে জাতিসংঘ প্রতিনিধি বলেন, খাদ্য ঘাটতি পূরণের জন্য বিদেশ থেকে আরও খাদ্য আমদানি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের জন্য সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি যে আবেদন জানিয়েছিলেন তাতে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।

কবি নজরুল আসছেন

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭২ সালের ২৪মে ঢাকায় আসেন। তার ঢাকা আসাকে কেন্দ্র করে সংস্কৃতিমহলে বেশ সাড়া লক্ষ্য করা যায়। কলকাতা থেকে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন বলে জানানো হয়। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান তাকে নিয়ে আসতে কলকাতা গেছেন এবং কবি পরিবারের ১৫ সদস্য তার সঙ্গে ঢাকায় আসবেন বলেও নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া তার সঙ্গে পশ্চিমবাংলা সরকারের একজন ডাক্তারের থাকবেন। জানানো হয় যে, কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকা আনার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেন। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধার্থ শঙ্কর নিজের উদ্যোগ আয়োজনটি তদারক করেন।