ভয়াবহ বন্যা, তৎপর বঙ্গবন্ধু

cover-pic‘সিলেটে সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। জেলার ৩২টি অঞ্চল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক লক্ষ আশি হাজার একর জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়ে গেছে। এরমধ্যে হাজার একর জমির আউশ এবং ৯৯ হাজার একর জমির উপর ফসল প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে’−১৯৭২ সালের ২৫ জুন দৈনিক পূর্বদেশের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পরিস্থিতিতে সিলেট সফরের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭২ সালের এই দিনে (২৪ জুন) সকালে সাহায্য ও পুনর্বাসনমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরাও কাজে নেমে পড়েন। বঙ্গবন্ধু শুরু থেকেই সিলেটের বন্যার ঘটনায় ত্রাণ তৎপরতা থেকে শুরু করে যাবতীয় কর্মসূচির সরাসরি তত্ত্বাবধান করেন।
অসাধু ব্যবসায়ীবিরোধী অভিযান
১৯৭২ সালের ২২ জুন বিকাল থেকে শুরু হওয়া অসাধু ব্যবসায়ীদের আটক অভিযানে শেষমেশ কোনও ফল পাওয়া যায়নি। সংবাদপত্রগুলো তাদের মতো করে অনুসন্ধানের চেষ্টা করে। অসাধু ব্যবসায়ীদের গুলি করে হত্যা করা হবে বলে বঙ্গবন্ধু আইন বদলানোর কথা উল্লেখ করলেও, আসলে কোনও পরিবর্তন হচ্ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষিত সময়সীমা পার হওয়ার পর থেকেই অভিযান চলছিল। কিন্তু ঢাকাবাসীর অভিযোগ, বেশিরভাগ দ্রব্যেরই উচ্চমূল্য অব্যাহত রয়েছে, শুধু তাই নয় সহকারী ব্যবস্থাপকরা কেউ কেউ একশ্রেণির সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীদের মালপত্র গোপনে লুকিয়ে রেখেছে বলে পূর্বদেশের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, বাজারে জিনিস পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।

3
যৌথ বিবৃতি
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডগলাস হিউম ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সদস্য পদ লাভ করায় আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ কমনওয়েলথে তার সঠিক ভূমিকা পালন করবে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দুদিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর শেষে প্রকাশিত এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ যাতে পায় সে ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন দেবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামাদ ডগলাসের কাছে বাংলাদেশ সরকারের নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ বৃহৎ শক্তির বাইরে আন্তর্জাতিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে মোজাফফর আহমেদ
সত্যিকারের জ্ঞান অর্জনে আত্মনিয়োগ জ্ঞানকে সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে দেশকে সার্বিকভাবে সমর্থন করায় শিক্ষার মূল লক্ষ্য ও বৈশিষ্ট্য হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী। নতুন ছাত্রসংসদের অভিযোগ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে সকল প্রবণতা ও অন্যান্য অসাধু পন্থা অবলম্বনের ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে রাষ্ট্রপ্রধান আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে আলাপে মিলিত হন ডগলাস হিউম। ব্রিটেনের বিদেশি নিয়ন্ত্রণ আইন বাঙালিদের প্রতি উদারভাবে প্রয়োগ করতে আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম কালে যুক্তরাজ্যের জনগণের সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রপ্রধান তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

2