ভারত ছাড়া যেকোনও স্থানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান ভুট্টো

BT-New১৯৭২ সালের ২৭ জুন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসার বিষয়ে আবারও আগ্রহ দেখান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি রেডিও পাকিস্তানে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। পরের দিন ২৮ জুন দৈনিক পূর্বদেশে এই খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, ভুট্টো বলেছেন যে ভারত ছাড়া অন্য যেকোনও স্থানে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য প্রস্তুত। এই বৈঠক ইরান, তুরস্কসহ যেকোনও দেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকাতেও তিনি যেতে পারেন বলে ইচ্ছার কথা জানান। যদিও এর আগেও তার এ ধরনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু সাফ জানিয়ে দেন, আগে স্বীকৃতি তারপরে কোনও আলাপ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদিন (২৭ জুন) বন্যাদুর্গতদের জন্য সাহায্য হিসেবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে সিলেটে যান। এটি আগের ১০ লাখ টাকা বরাদ্দের অতিরিক্ত। বঙ্গবন্ধু সেখানে গিয়ে বলেন, দরকার হলে আরও বরাদ্দ করা হবে। পরিস্থিতি দেখার জন্য তিনি হেলিকপ্টারযোগে সেখানে যান ও জনসভায় অংশ নেন। সফরের সময় সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, জেনারেল এমএজি ওসমানী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান আব্দুর রাজ্জাক এবং স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা।

বঙ্গবন্ধু সুনামগঞ্জ কানাইঘাট, মৌলভীবাজার হবিগঞ্জে অনুষ্ঠিত জনসভায় ভাষণ দেন। তিনি হযরত শাহ জালালের মাজারে ফাতেহা পাঠ করেন এবং দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন যারা এবং যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এসব জনসভায় তিনি জনগণকে দেশে কৃষি বিপ্লবের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে এবং দেশ থেকে সবরকমের দুর্নীতিকে দূর করতে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে প্রতিবছর বন্যার পুনরাবৃত্তির কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকরা যে বাংলাদেশকে শাসন করেছে তার জ্বলন্ত স্বাক্ষর হচ্ছে বাংলাদেশের এই সমস্যাটির প্রতি উদাসীনতা। তিনি জনগণকে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কার্যকরী প্রকল্প তৈরি করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেরি হতে পারে, কেননা হাতে তেমন তহবিল নেই। তদুপরি এই মুহূর্তে জনগণকে অনাহার থেকে রক্ষা করা প্রধান কাজ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টটপরিত্যক্ত বাড়ি মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া হবে

পরিত্যক্ত বাড়ি সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সরকারি হ্যান্ডআউট জানানো হয়। পরিত্যক্ত বাড়িঘরগুলো অধিকাংশ সরকারি দফতর হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী ইত্যাদির কাছে মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা শহরের বেলায় উক্ত ও নগর উন্নয়ন দফতর ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে পরিত্যক্ত বাড়িঘরের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করবেন। সরকারি দফতর, কর্মচারীদের বাসস্থান এবং বৈদেশিক মিশনগুলোর প্রয়োজনমাফিক বাড়িগুলো গৃহ সংস্থান বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অভিযান চলছে

ঢাকায় কার্ফু দিয়ে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে। শহরে কারফিউ জারি করে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালানোর তৃতীয় দিনে এইদিন কলাবাগান, কাঁঠালবাগান ও গ্রিন রোড এলাকা থেকে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব এলাকায় কার্ফিউ বহাল ছিল। উদ্ধার করা হয়েছে বেআইনিভাবে রাখা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ জানিয়েছে বেআইনি ও দখলকৃত নানা জিনিস রাস্তায় ফেলে রেখে যাচ্ছে কেউ কেউ। যেসব এলাকায় এখনও কার্ফিউ দেওয়া হয়নি সেসব জায়গা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব পাওয়া যাচ্ছে।