উপহার চাইলেন বঙ্গবন্ধু

১৯৭২ সালের দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার একাংশ ১৯৭২ সালের ১ আগস্ট দেশবাসীর কাছে সাড়ে তিন কোটি বৃক্ষ উপহার চান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের সাড়ে তিন কোটি সুস্থ-সবল নর-নারী প্রত্যেকে তাকে একটি করে বৃক্ষ উপহার দেবেন। ১৯৭২ সালের গণভবনে নারকেল চারা রোপণের সময় বঙ্গবন্ধু এই আশা প্রকাশ করেন।

গণভবনের চারপাশে একশ নারকেল গাছ এবং তিনশ সুপারি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হয়। এর কয়দিন আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীসহ সকল সরকারি দফতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থাকে তাদের ভবনের চারপাশে খালি জায়গায় এবং পথের ধারে বৃক্ষরোপণের নির্দেশ দেন।

১৯৭২ সালের দৈনিক বাংলা পত্রিকার একাংশএদিকে এক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ঢাকা রোটারি ক্লাব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রেষ্ঠ রোটারিয়ান ঘোষণা করে। সত্যের জন্য আপোষহীন ভূমিকা ও ন্যায়বিচারের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে শ্রেষ্ঠ রোটারিয়ান ঘোষণা করা হয় বলে বাসসের খবরে প্রকাশ করা হয়। বঙ্গবন্ধু ২ জুলাই কুষ্টিয়ার পথে ঢাকা ত্যাগ করবেন বলেও জানায় বাসস।সেখানে অবস্থানকালে এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা তার। সেখানে বঙ্গবন্ধুর কর্মসূচিতে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

শর্তযুক্ত ঋণ নেব না

অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ বাজেটের পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে না খেয়ে মরবো তবুও শর্তযুক্ত কোনও ঋণ নেব না। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বিদেশি সাহায্য গ্রহণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমাদের নীতি হচ্ছে কোনও একটি দেশের প্রতি নির্ভরশীল না হয়ে বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করা। তিনি বলেন, ভিক্ষার ঝুলি হাতে করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা জাতিকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে চাই না, যেমনটি পাকিস্তান চেয়েছিল। পশ্চিমা দেশের সাহায্য নিয়ে জোট নিরপেক্ষতা রক্ষা ও সমাজতন্ত্রের বুনিয়াদ স্থাপন সম্ভব কি—না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা জাতি যখন মাথা তুলে দাঁড়ায় তখন তাকে কেউ রোধ করতে পারে না।১৯৭২ সালের দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার একাংশ

ইন্দিরা-ভুট্টো বৈঠকে কিছু হয়নি

২৪ ঘন্টায় দুইবার শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টো উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তির কাঠামো উদ্ভাবনের অসুবিধা কাটাতে পারেননি। ইন্দিরা গান্ধি পাকিস্তানকে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতায় আসার পরামর্শ দেন। তার মতে পাকিস্তান যত শিগগির বাংলাদেশের সাথে নিষ্পত্তি করবে তত দ্রুত অন্যান্য প্রশ্নের মীমাংসা হয়ে যাবে।১৯৭২ সালের দৈনিক বাংলা পত্রিকার একাংশ

বৈঠক শেষে ইন্দিরা তাদের অভিজ্ঞতা ও কথাবার্তার বিস্তারিত বিবরণ জানাতে অস্বীকার করেন। তারা বলেন, তারা আবার বসবেন। আলোচনা কেমন হচ্ছে এ প্রশ্নের জবাবে ভুট্টো বলেন, পরে শুনবেন।

কার্ফু দিয়ে অস্ত্র উদ্ধার

১ জুলাই জিগাতলা রায়েরবাজার ও মধু বাজার এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু যান, বেশকিছু লুটের ও মজুতকৃত মালামাল এবং অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া এলাকার বাইরে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সন্দেহজনক চলাফেরার অভিযোগে পুলিশ ৩০ জুন রাতে ৪২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। সমাজবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ও অসাধু ব্যবসায়ীদের ‘সিধা পথে’ আনতে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা কার্যকর করতে ২২জুন থেকে এই অভিযান শুরু হয়।