(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ২ জুলাইয়ের ঘটনা।)
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের মাটিতেই পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট যত খুশি সম্মেলনে মিলিত হোন না কেন, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। তিনি বলেন, ‘কোনও সম্মেলন বা কোনও ব্যক্তি বাংলাদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে পারবে না। যারা বাংলাদেশের নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হবে।’
১৯৭২ সালের ২ জুলাই কুষ্টিয়ার এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সৈন্যদের বাঁচাতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোকে তীব্র সমালোচনা করে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষ হত্যা ও অন্যান্য জঘন্য অপরাধে অপরাধী সৈন্যদের জন্য লজ্জা করা উচিত। নির্লজ্জতার একটা সীমা থাকা উচিত।’
ভুট্টোকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাংলার মাটিতেই যুদ্ধবন্দিদের বিচার সম্পন্ন হওয়ার কথা আবারও উচ্চারণ করেন বঙ্গবন্ধু।
শাসনতন্ত্র প্রণীত হবে শিগগিরই
খাদ্য পরিস্থিতি
দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য জনসাধারণকে কৃষি বিপ্লব সাধনের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে হবে বলে জানতে পেরেছিলাম। পাকিস্তানি কারাগার থেকে বের হয়ে এসে দেখি, কোষাগার শূন্য।’ তিনি বলেন, ‘আগামী মাসের (আগস্ট) মধ্যে ১৭ লাখ টন খাদ্যশস্য এসে যাবে।’
ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে আসছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু জোর দিয়ে বলেন, ‘সরকার কঠোর হস্তে তা দমন করবে।’ তিনি বলেন, ‘মুনাফাখোর, কালোবাজারি, চোরাকারবারি ও সমাজবিরোধীদের সংশোধনের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করে অবৈধ দ্রব্যাদি ও অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার করা হচ্ছে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘গণতন্ত্র আছে, তাই বলে গণতান্ত্রিক অধিকারের অপব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’ দুর্নীতিবাজদের বের করে দিতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ নেতা এবং কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিপরায়ণ লোকদের বহিষ্কার করুন। শুধুমাত্র নিঃস্বার্থ লোকেরা পার্টিতে স্থান পাবেন।’