হাসপাতালে শুয়ে দেশের বন্যা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বঙ্গবন্ধু

1(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ৪ আগস্টের ঘটনা।)

সুদূর লন্ডনে চিকিৎসারত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুরোপুরি সেরে না উঠতেই দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ১৯৭২ সালের এই সময়ে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপ হচ্ছিল। তিনি লন্ডন ক্লিনিকে বসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রোগশয্যায় থেকে তিনি বেগম মুজিব ও তার চিকিৎসকদের কাছে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চান। এ সময় লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তাকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেন। ত্রাণ কার্যক্রম কি রকম চলছে এবং ক্ষতির পরিমাণের বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়।

এদিকে এনার খবরে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু এদিন আগের চেয়ে কিছুটা হাসিখুশি ছিলেন। বেগম মুজিব ও অন্যদের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলেছেন। এদিকে সকালে স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর পিত্তকোষ থেকে পাথর অপসারণ করা হয়েছে। এ সময় অ্যাপেন্ডিক্সও অপসারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে বলা হয়, এই দিনে সকালে বঙ্গবন্ধুকে হাসপাতালে কিছুক্ষণ হাঁটানো হয়। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার নুরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু বেশ ভালোভাবে সেরে উঠছেন।

দালালের শাস্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনা

১৯৭২ সালের ৪ আগস্ট মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দালালদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের জন্য দালাল আদেশে সম্ভাব্য সংশোধনের প্রশ্ন আলোচিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওয়াকিবহাল সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিসভা জঘন্যতম অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটি অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডসহ অন্যান্য কঠোর সাজা প্রদানের উদ্দেশে দালাল আদেশ সংশোধনের সুপারিশ করে।

বঙ্গবন্ধুর জন্য প্রার্থনা

সমগ্র বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আশু রোগমুক্তি, সুস্থ হয়ে প্রত্যাবর্তন ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ১৯৭২ সালের ৪ আগস্ট সারা দেশে বিশেষ প্রার্থনা, কাঙালিভোজ খাওয়ানো হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আহ্বানে এই জাতীয় প্রার্থনা দিবস পালিত হয়।

2

ভূমিহীন কৃষক জমি পাবে

ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ভূমি বিতরণ করার সিদ্ধান্ত হয়। ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার দফতরের মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত জানান,  বাংলাদেশের ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে ভূমি বিতরণ করা হবে। সাংবাদিকদের বলা হয়, ৪৮ হাজার আবাদি জমির মালিকদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ৮ লাখ একর জমি  রয়েছে। শুধু ভূমিহীন কৃষক না, যাদের সামান্য কিছু জমি রয়েছে, এই জমি তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।